নিজস্ব প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় বড়পলাশবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশ্যপ্রহরীকে অবরুদ্ধ রেখে ৪টি শ্রেণি কক্ষের টিন, চেয়ার বেঞ্চ ও আসবাবপত্র পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সেই সাথে প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষের তালা ভেঙ্গে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, প্রজেক্টরসহ অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র লুটপাট করে নিয়ে গেছে।
সোমবার (১২ জুলাই) রাত ১২টার সময় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের পুড়ে যাওয়া আসবাবপত্র ও লুটপাট হওয়া জিনিসপত্রসহ ১৫ লক্ষাধিক টাকা ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যালয়ের জমি বিরোধের জেরে এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও স্থানীয় লোকজন প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নগেন্দ্রনাথ পাল জানান, রাতে বিদ্যালয়ের নৈশ্যপ্রহরীকে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দিয়ে কে বা কারা দাহ্য পদার্থ দিয়ে টিনসেডের ৪টি শ্রেণি কক্ষে আগুন ধরিয়ে দেয়। স্থানীয়রা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে এবং নৈশ্যপ্রহরীকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। নৈশ্যপ্রহরী কৃষ্ণ চন্দ্র বর্তমানে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ইনচার্জ দেলোয়ার হোসেন জানান, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছি। দাহ্য পদার্থ দিয়ে আগুন লাগার কারণে দ্রুত ঘরগুলো টিন ও চেয়ার বেঞ্চ জ্বলে গেছে।
এলাকাবাসীর কাছে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই এলাকার আব্দুস সোবহান ও সামশুল হুদার সাথে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির ১০ শতক জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে একাধিকবার শালিস বৈঠকে বসা হয়। বিষয়টির এখনও সমাধান হয়নি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রহমান জানান, বিদ্যালয়ের আগুনের ঘটনা প্রধান শিক্ষক জানিয়েছে। তাঁকে বিদ্যালয়ের ক্ষয়-ক্ষতি উল্লেখ করে থানায় ডাইরি করতে বলা হয়েছে।
ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি ও প্রাক্তন উপজেলা চেয়ারম্যান মো. কাজী ফাহিম উদ্দীন আহমেদ জানান, ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আসলাম জুয়েল জানান, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘটনাদৃষ্টে বিদ্যালয়ের কক্ষে আগুন দেয়ার ঘটনা ন্যাক্কারজনক। ঘটনার সাথে জড়িতের বের করে আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দেন তিনি।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যোবায়ের হোসেন জানান, প্রধান শিক্ষককে থানায় লিখিতভাবে জানানোর কথা বলা হয়েছে। বড়পলাশবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৬৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। যেকোনো সময় বিদ্যালয় খোলার নির্দেশনা আসলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করতে চরম সমস্যায় পড়তে হবে বলে মনে করেন প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।
সান নিউজ/এফএআর