সান নিউজ ডেস্ক: বাংলা বানানে মূর্ধন্য-ণ ও মূর্ধন্য-ষ এর ব্যবহার নিয়ে ঝামেলা পোহাতে হয়নি এমন লোক মেলা ভার। দ্বিধায় থাকতে হয় কখন কোনটা হবে। ‘ণ’ ও ‘ষ’ বর্ণের ব্যবহার নিয়ে বিভ্রান্তির আরো একটি কারণ হলো চলতে-ফিরতে সাইনবোর্ড, ব্যানার, দোকানের নাম, পণ্যের বিজ্ঞাপনসহ বিভিন্ন জায়গায় অনেক সময় ‘ণ’ ও ‘ষ’-এর ব্যবহারে অগণিত ভুলে।
যেমন—ফটোষ্ট্যাট, হর্ণ, পোষ্ট, ইষ্টার্ণ, ঘন্টা, মাষ্টার, জিনিষ, পোষাক ইত্যাদি। এই শব্দগুলোর সঠিক বানান যথাক্রমে—ফটোস্ট্যাট, হর্ন, পোস্ট, ঘণ্টা, মাস্টার, জিনিস, পোশাক। এ বানানগুলো যাতে ভুল না হয় তার জন্য বাংলা ব্যাকরণের ণত্ব ও ষত্ব বিধানটি জেনে নেয়া যাক।
ণত্ব বিধান : তৎসম শব্দের বানানে ণ-এর সঠিক ব্যবহারের নিয়মই ণত্ব বিধি।
ব্যবহারের কয়েকটি উদাহরণ
ট-বর্গীয় ধ্বনির আগে তৎসম শব্দে সব সময় মূর্ধন্য হয়। যেমন—ঘণ্টা, লণ্ঠন, কাণ্ড ইত্যাদি।
ঋ, র, ষ—এর পরে মূর্ধন্য ‘ণ’ হয়। যেমন—ঋণ, তৃণ, বর্ণ, কারণ, ভীষণ ইত্যাদি।
কতগুলো শব্দে স্বভাবতই ‘ণ’ হয়। যেমন—বাণিজ্য, লবণ, বীণা, কল্যাণ, পুণ্য, নিপুণ, গণনা, পণ্য ইত্যাদি।
বিদেশি শব্দে ‘ণ’ হয় না। যেমন—পোস্ট, হর্ন, ইস্টার্ন ইত্যাদি।
ষত্ব বিধান : তৎসম শব্দের বানানে মূর্ধন্য ‘ষ’-এর ব্যবহারের নিয়মিই ষত্ব বিধি।
কয়েকটি নিয়ম ও উদাহরণ :
অ, আ ভিন্ন অন্য স্বরধ্বনি এবং ক ও র-এর পরে প্রত্যয়ের স ষ হয়। যেমন—ভবিষ্যৎ, মুমূর্ষু, চক্ষুষ্মান, চিকীর্ষা ইত্যাদি।
ই-কারান্ত এবং উ-কারান্ত উপসর্গের পর কতগুলো ধাতুতে ‘ষ’ হয়। যেমন—অভিষেক, সুষুপ্ত, অনুষঙ্গ, প্রতিষেধক, প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি।
‘ঋ’ ও ঋ-কারের পর ‘ষ’ হয়। যেমন—ঋষি, কৃষক।
তৎসম শব্দে ‘র’ এর পর ‘ষ’ হয়। যেমন—বর্ষা, ঘর্ষণ।
ট-বর্গীয় ধ্বনির সঙ্গে ‘ষ’ যুক্ত হয়। যেমন—কষ্ট, কাষ্ঠ।
কতগুলো শব্দে স্বভাবতই ‘ষ’ হয়। যেমন—ষড়ঋতু, আষাঢ়, ভাষা, মানুষ, দ্বেষ।
বিদেশি শব্দে ‘ষ’ হয় না। যেমন—জিনিস, পোশাক, মাস্টার, পোস্ট ইত্যাদি।
সান নিউজ/এমএম