হাবিপ্রবি প্রতিনিধি : বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতিতে বন্ধ রয়েছে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অনলাইনে ক্লাসের অনুমতি থাকলেও পরীক্ষা গ্রহণের নেই অনুমতি। এতে তীব্র থেকে তীব্রতর সেশনজটের আশঙ্কায় রয়েছেন হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
করোনা পরিস্থিতিতে থমকে গেছে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম। দীর্ঘ ১ বছর ২ মাস ধরে বন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়। এদিকে গত সাড়ে তিন মাস ধরে নেই স্থায়ী উপাচার্য। এতে তীব্র সেশনজটের হতাশায় ভুগছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী।
এদিকে ২৯ মে পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। অন্যদিকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইনে স্থগিত পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এখানে সৃষ্টি হয়েছে নতুন সমস্যা। শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে না চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা নিতে পারবে না। এবং পরীক্ষা নিতে হলে লাগবে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের অনুমতি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬ শিক্ষাবর্ষের করোনার মধ্যে স্নাতক চূড়ান্ত পরীক্ষা হলেও অনেক বিভাগের পরীক্ষার ফলাফল পায়নি শিক্ষার্থীরা। ২০১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ৮ সেমিস্টার পরীক্ষা শেষ করে স্নাতক পাস করার কথা থাকলেও তাঁরা এখনও ৬ষ্ঠ সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষা দিতে পারেনি।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা গত তিন বছর মাত্র তিনটি সেমিস্টার শেষ করতে পেরেছে। একই পরিস্থিতিতে রয়েছে ২০১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। তাঁরা দুই বছরে দুইটি সেমিস্টারের পরীক্ষা দিতে পেরেছে। অন্যদিকে ২০২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা ভর্তি হওয়ার এক বছরে কোনো পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেননি।
এতে প্রতিটি শিক্ষাবর্ষে প্রায় দুই বছরের সেশনজটে আশঙ্কায় রয়েছে শিক্ষার্থী। যার কারণে মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভুগছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী সানজিদা সোমা বলেন, করোনা পরিস্থিতি একেবারে নির্মূল হবে না সেটা আমরা সবাই বুঝতে পেরেছি। কিন্তু জীবন থেমে থাকবে না। তাই আর দেরি না করে খুব শীঘ্রই একটা সিদ্ধান্তে আসা দরকার। অনলাইনে সব কুইজ-মিড পরীক্ষাগুলো এসাইনমেন্ট আকারে শেষ করা হোক তারপর অনলাইন হোক বা অফলাইনে লেভেল ভিত্তিক
১টা করে সেমিস্টার ফাইনাল শেষ করা উচিত।এলোপাথাড়ি অনলাইনে শুধু ক্লাস করেই যাচ্ছি, লাভের লাভ কিছুই হচ্ছে না।
তিনি আরও জানান, আমরা যখন ভর্তি হই তখন উপাচার্য নিয়োগে দেরি হওয়ায় আমরা এমনিতেই ৩ মাসের মত পিছিয়ে ছিলাম। এখন আবার উপাচার্য নিয়োগে দেরি করা হচ্ছে। দৃষ্টি আকর্ষণ করছি প্রশাসনের আমাদের এই সেশনজট থেকে মুক্তি দিন।
এব্যাপারে রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. বিধান চন্দ্র হালদার বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে অনলাইনেই সেমিস্টার ফাইনাল নেয়া হবে। পরীক্ষা কবে নাগাদ হতে পারে জানতে চাইলে তিনি জানান, এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের গ্রীন সিগন্যালের অপেক্ষায় আছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে অনলাইন পরীক্ষার দিকেই এগোবে হাবিপ্রবি।
অনলাইনে পরীক্ষার ধরন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, লিখিত পরীক্ষার বিকল্প হিসেবে ভাইভা এবং ক্রিয়েটিভ এসাইনমেন্ট দেয়া হতে পারে। ল্যাব কোর্সের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ল্যাব পরীক্ষা নেয়া যেতে পারে। পরীক্ষার নিয়মনীতি নিয়ে একাডেমিক কাউন্সিলে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
সান নিউজ/এসএম