বিশেষ প্রতিবেদন: গত ২৪শে ফেব্রুয়ারি, “Youth Skill Development in Bangladesh: Prospects and Challenges” শিরোনামে অনুষ্ঠিত হয় রাইট টু পিস আয়োজিত একটি ওয়েবিনার, যার স্লোগান ছিলো “Skilled Youth for Better Tomorrow”। হেল্প দা ফিউচার (HTF), সেকেন্ডারি অ্যান্ড ইন্টারমিডিয়েট লেভেল স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন (SILSWA) এবং হাউজ অব ভলান্টিয়ার বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন (HoVBD) এর সম্মিলিত যোগদানের মাধ্যমে এই ওয়েবিনারের আয়োজন করে রাইট টু পিস।
এই ওয়েবিনারে ‘আরটুপি ই-বুলেটিন' এ প্রকাশিত ৫টি গবেষণালব্ধ প্রবন্ধের সারমর্ম উপস্থাপন করা হয় এবং প্রতিটি আর্টিকেল উপস্থাপনের পর সংক্ষিপ্ত আকারে তার বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করা হয়।
ওয়েবিনারে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন রাইট টু পিস এর সম্মানিত প্রধান পৃষ্ঠপোষক ডক্টর সাবের আহমেদ চৌধুরী।তিনি সম্মানিত অতিথি বক্তাগণকে স্বাগত জানান এবং বাংলাদেশের বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে যুব দক্ষতার উন্নয়ন নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে এখনও যুব দক্ষতার বিরাট ঘাটতি রয়েছে’। একইসাথে তিনি বিশ্বাস করেন, সম্মিলিতভাবে কাজ করার মাধ্যমে এই সমস্যা থেকে উত্তরণ লাভ করা সম্ভব।
বিভিন্ন সংগঠন থেকে সম্মানিত বক্তাগণ ছিলেন HTF এর প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি সাইফুল্লাহ খালেদ, SILSWA এর সভাপতি মোঃ আব্দুল্লাহ এবং HoVBD এর প্রজেক্ট ডিরেক্টর মাইশা আহসান মম। ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন রাইট টু পিস এর একজন স্বেচ্ছাসেবক ফাইরুজ হুমায়রা ফাবিহা।রাইট টু পিস থেকে প্রবন্ধ উপস্থাপনায় ছিলেন মনজুরুল মোরশেদ মুন,আজদিকা আফসানা,রুহি রুসাবা জাহওয়া জাহান,মাহাবুবা ইসলাম মীম এবং রাবেয়া আক্তার সাথী। আলোচনায় বক্তারা যুব দক্ষতার উন্নয়ন,শিক্ষার কারিগরি ক্ষেত্র, তরুণদের কর্মসংস্থানের প্রতিবন্ধকতা স্বেচ্ছাসেবিতা এবং যথাযথ দক্ষতার উন্নয়ন ইত্যাদি বিষয়গুলির প্রতি আলোকপাত করেন।
মোঃ সাইফুল্লাহ তার বক্তব্যে বৃত্তিমূলক শিক্ষার নিম্ন সংযুক্তির ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি এ ব্যাপারে জোর দিয়ে বলেন, ‘সুযোগের ঘাটতি থাকার পরেও সরকার দেশের প্রতিটি উপজেলায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিয়েছে এবং উন্নত নেটওয়ার্ক প্রদানের চেষ্টা করছে। তাই কারো মধ্যে যদি পর্যাপ্ত ইচ্ছাশক্তি থাকে, সে হার্ডস্কিল এবং সফটস্কিল অর্জন করতে পারে’।
মাইশা আহসান মম সম্মতি পোষণ করে বলেন, কারিগরি শিক্ষার ব্যাপারে গৎবাঁধা ভাবমূর্তি এই অবস্থাকে আরো শোচনীয় করে তুলছে। তিনি আরো বলেন, ‘অর্জিত দক্ষতাকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে এবং তার জন্য আন্তরিকতা ও দায়িত্বশীলতা প্রয়োজন ‘।
সাইফুল্লাহ খালেদ কারিগরি শিক্ষার ব্যাপারে নিজের মন্তব্য রেখে বলেন, ‘চাকরির বাজারে কারিগরি শিক্ষা এখনো কোনো সক্ষমতা হিসেবে বিবেচিত হয় না’।তিনি যোগ করেন, ‘এটি অসাধারণ যে আরো বেশি মানুষ স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রমের প্রতি আগ্রহী হচ্ছে, তবে পরিকল্পনাগুলো মজবুত না হওয়ায় অনলাইন কার্যক্রমগুলো ফলপ্রসূ হচ্ছে না’।
সমাপনী বক্তৃতায় জনাব মাইন উদ্দিন রাইট টু পিস এর সম্মানিত পৃষ্ঠপোষক এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালস (বিইউপি) এর সহকারী অধ্যাপক অতিথি বক্তাগণ কে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং তাদের মতামত ও পরিশ্রমের জন্য উৎসাহ প্রদান করেন এবং ওয়েবিনার আয়োজনকারী স্বেচ্ছাসেবকদের উৎসাহ দেন।তিনি বলেন, ‘আমাদেরকে নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে। আমরা সমস্যার জন্য সমাধান পাচ্ছি কিন্তু নতুন আরো সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তাই অভিন্ন লক্ষ্য অর্জনের জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করা প্রয়োজন’।
রাইট টু পিস এর স্বেচ্ছাসেবকগণ এবং অন্যান্য সংগঠনের সদস্যগণ এই ওয়েবিনারে যোগদান করেন।
একটি সচেতন ও উন্নত সমাজের লক্ষ্য এবং যুব দক্ষতার উন্নয়নের দর্শন নিয়ে গবেষণা, সচেতনতা বৃদ্ধি ও সংলাপ, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন, অ্যাডভোকেসি ও নেটওয়ার্কিং, আর্তমানবতার সেবা ইত্যাদি ক্ষেত্রে রাইট টু পিস দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কাজ করে যাচ্ছে।