নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা ভাইরাসে মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা পাচ্ছে অটোপাস। কিন্তু প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা কোন পদ্ধতিতে পদোন্নতি পাবে সে বিষয়ে কোনো ঘোষণা দেয়া হয়নি আজও। শিখন ঘাটতি ঘোচাতে পরিকল্পনা মাফিক মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের ওপর নেয়া হচ্ছে এ্যসাইনমেন্ট।
রোববার (১৫ নভেম্বর) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া থেমে নেই। সংসদ টিভি এবং বেতারের কর্মসূচির পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে শিক্ষকদের গ্রুপ তৈরি করে দেয়া হয়েছে।
কিন্তু প্রাথমিক স্তরের জন্য এ ধরনের বিশেষ কোনো কর্মসূচি এখনও ঘোষণা করা হয়নি। ফলে অনেকটা দিকনির্দেশনা ছাড়াই চলছে এ স্তরের শিক্ষা।
তাদের মধ্যে যারা পারছেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীর বাড়ি বাড়ি খোঁজ নিচ্ছেন। বাকিরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পাঠ প্রদান গ্রহণ করছেন। এক্ষেত্রে অভিভাবকরা মাধ্যম হিসেবে কাজ করছেন। আমাদের মূল লক্ষ্য শিক্ষার্থীদেরকে লেখাপড়ায় যুক্ত রাখা, পরীক্ষা নেয়া নয়।
প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের পদোন্নতির ব্যাপারে সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিগগিরই ঘোষণা দেয়া হবে।
করোনার কারণে ১৭ মার্চ থেকে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। তবে শর্ত সাপেক্ষে কওমি মাদ্রাসাগুলো খুলে দেয়া হয়েছে। আর কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরাসরি লেখাপড়া করানোর অনুমতি পায়নি। সেই হিসাবে ৯ মাস ধরে বন্ধ আছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
বিদ্যমান বাস্তবতায় কেবল বছরের প্রথম আড়াই মাসের শ্রেণি কার্যক্রমই শিক্ষার্থীদের চলতি বছরের সরাসরি প্রাপ্ত পাঠ। এতে শিক্ষার্থীর বয়স ও শ্রেণি অনুযায়ী শিখন ও প্রশিক্ষণে বড় ধরনের ঘাটতি তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, যদিও বিকল্প মাধ্যমে শিশুদের লেখাপড়া চলছে কিন্তু আনুষ্ঠানিক পাঠদানের অভাবে শিখনের একটা গ্যাপ তৈরি হয়ে গেছে। শহরাঞ্চলে কম পড়বে কিন্তু মূল প্রভাবটা পড়বে গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের ওপর।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এর সদস্য (প্রাথমিক) অধ্যাপক রিয়াজুল হাসান বলেন, প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের আমরা তিন ভাগে ভাগ করে শিখন ঘাটতি পূরণের চিন্তা করেছি। প্রথমটি হচ্ছে, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। এই স্তরে শিক্ষার্থীরা যুক্ত বর্ণ এবং লেখা ও পড়ার দক্ষতার অর্জন করে থাকে।
এটা পূরণ করা বড় চ্যালেঞ্জ। দ্বিতীয় ভাগে আছে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী। এদের যে ঘাটতি থাকবে সেটা পূরণ করা বেশি কষ্টকর হবে না। এই দুই ভাগের জন্য আমরা রিমেডিয়াল প্যাকেজ করব।
তৃতীয় ভাগে আছে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তারা তূলনামূলক বড়। এজন্য তাদেরকে মাধ্যমিক স্তরের মতো এসাইনমেন্ট দেয়া যায় কি না সেই ভাবনা চলছে। দুএকদিনের মধ্যে এ নিয়ে কাজ শুরু করা হবে।
ডিপিই মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, স্কুল খোলার সম্ভাবনার নিরিখে শিক্ষার্থীদের জন্য এর আগে ৪০ দিনের একটি প্যাকেজ করেছিলাম। সেটি এনসিটিবিতে পাঠানো হয়েছে।
সান নিউজ/এসএ