নিজস্ব প্রতিবেদক:
বোয়ালমারী (ফরিদপুর): সরকারি ও স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশনা উপেক্ষা করে বাড়িতে পরীক্ষার নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মাসিক বেতন, বিদ্যুৎ বিল ও পরীক্ষার ফি আদায় করায় বোয়ালমারী জর্জ একাডেমির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে উপজেলা প্রশাসন। গত ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ থাকলেও বোয়ালমারী পৌর শহরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি জনপ্রতি মাসিক ১৫ টাকা হারে বিদ্যুৎ বিল বাবদ প্রায় এক লাখ ২০ হাজার টাকা, মাসিক বেতন বাবদ প্রায় আট লাখ টাকা ও পরীক্ষার ফি বাবদ প্রায় তিন লাখ টাকা আদায় করেছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহিম বলেন, ‘বোয়ালমারী জর্জ একাডেমির প্রধান শিক্ষককে পরীক্ষা এবং করোনাকালের যাবতীয় পাওয়া আদায় করতে নিষেধ করেছি।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ বলেন, ‘আমি ছুটিতে রয়েছি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে এ ব্যাপারে সরকারি নির্দেশনা অনুসারে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। প্রধান শিক্ষককে আমার কার্যালয়ে ডেকেছি। শনিবারের (১৯ সেপ্টেম্বর) মধ্যে সর্বশেষ পরিস্থিতি জানানো যাবে।’
প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের দুই সদস্য জাহাঙ্গীর আলম কালা মিয়া ও আনিচুজ্জামান বলেন, প্রধান শিক্ষক এ ব্যাপারে পরিচালনা পর্ষদের কোনো সদস্যের সঙ্গে কোনো আলোচনা করেননি। একক ক্ষমতাবলে এসব করছেন তিনি। পরীক্ষার নামে টাকা ওঠানোর বিষয়েও প্রধান শিক্ষক ভালো জানেন।
তবে পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এম মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘করোনার কারণে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় যে ক্ষতি হয়েছে, সেটা পুষিয়ে নিতে তাদের বইমুখী করতে বাড়িতে মূল্যায়নের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
আর প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজ ফের দাবি করেন, ‘শিক্ষকদের বেতন এ পর্যন্ত স্কুলের তহবিল থেকেই পরিশোধ করে এসেছি। সাধারণ তহবিল শূন্য হওয়ায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বকেয়া পাওনাদি আদায় করা হচ্ছে।’
এর আগে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে পরীক্ষার নামে বোয়ালমারী জর্জ একাডেমির বিরুদ্ধে অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগের খবর সান নিউজসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচার হয়। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয় জানিয়েছিল, বাড়িতে পরীক্ষা নেওয়া বা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন-ভাতা আদায় সংক্রান্ত কোনো নির্দেশনা তারা দেয়নি। সরকারি কোনো প্রজ্ঞাপনও জারি হয়নি। বন্ধের মধ্যেও টিউশন ফি, পরীক্ষার ফি এবং বিদ্যুৎ বিল আদায় করায় বিদ্যালয়টির প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সান নিউজ/ এআর