নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর উত্তর বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ‘ছেলেধরা’ অপবাদ দিয়ে তাছলিমা বেগম রেনুকে পিটিয়ে হত্যার মামলায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকার সিএমএম আদালতের ডেসপাস শাখায় এ অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক আব্দুল হক। রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য অভিযোগপত্রটি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদবীর ইয়াছির আহসান চৌধুরীর আদালতে উপস্থাপন করা হবে।
মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- ইব্রাহিম ওরফে হৃদয় মোল্লা, রিয়া বেগম ময়না, আবুল কালাম আজাদ, কামাল হোসেন, মো. শাহিন, বাচ্চু মিয়া, মো. বাপ্পি, মুরাদ মিয়া, সোহেল রানা, আসাদুল ইসলাম, বেল্লাল মোল্লা, মো. রাজু ও মহিন উদ্দিন। তবে জাফর হোসেন পাটোয়ারী ও ওয়াসিম আহমেদ অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে দোষীপত্র দেওয়া হয়েছে। আলিফ, মারুফ, সুমন ও আকলিমা- এ চারজনের পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা না পাওয়ায় তাদের আসামি করা হয়নি। পরবর্তীতে পাওয়া গেলে সম্পূরক চার্জশিটে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে জানান তদন্তকারী কর্মকর্তা আব্দুল হক।
সিএমএম আদালতে বাড্ডা থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা মাঝহারুল ইসলাম জানান, আসামিদের মধ্যে ওয়াসিম, হৃদয় ও রিয়া বেগম গ্রেপ্তার হয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। রিয়া বেগম, বাচ্চু মিয়া, শাহীন, মুরাদ ও বাপ্পি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন। আসামি মহিন উদ্দিন পলাতক।
গত বছরের ২০ জুলাই সকালে ছেলেকে ভর্তি করাতে খোঁজ-খবর নিতে উত্তর বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান তাসলিমা বেগম রেনু। এ সময় তাকে ‘ছেলেধরা’ অপবাদ দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ওইদিন বাড্ডা থানায় ৪০০/৫০০ জনকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে নিহত তাসলিমার ভাগ্নে নাসির উদ্দিন হত্যা মামলাটি করেন। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বেশ কয়েকজনকে তখন গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
রেনু হত্যা মামলাটি তদন্ত করছিলেন বাড্ডা থানার ইনস্পেক্টর আব্দুর রাজ্জাক। পরে গত বছরের নভেম্বরে মামলাটির তদন্তভার গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) দেওয়া হয়। তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার ১০ মাসের মধ্যে অভিযোগপত্র দিল সংস্থাটি।
নিহত তাসলিমার বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে। মহাখালীতে চার বছরের মেয়ে তুবা, ১১ বছরের ছেলে তাহসিন ও মাকে নিয়ে থাকতেন তাসলিমা। দুই বছর আগে স্বামীর সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়।
সান নিউজ/ এআর