নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশের শান্তি বিঘ্নিত করতে রোহিঙ্গাদের হাতিয়ার করছে পাকিস্তান। রোহিঙ্গা শরণার্থীরা মাদক পাচারের পাশাপাশি জঙ্গি কার্যকলাপেও যুক্ত হয়ে পড়েছে। ফলে নতুন করে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বাংলাদেশে।
পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের হয়ে জেএমবি বা জামা’আতুল মুজাহিদীন রোহিঙ্গাদের জঙ্গি প্রশিক্ষণে মদদ দিচ্ছে। পাক মদদপুষ্ট জেএমবির কারণেই বাংলাদেশেও আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মির (আরসা) বাড়ন্ত লক্ষ্য করা যায়। সব মিলিয়ে বাড়ছে জঙ্গি তৎপরতা।
ডিডব্লিউর প্রতিবেদনে বলা হয় রোহিঙ্গাদের সঙ্গে পাকিস্তানের মধ্যস্থতায় জেএমবির যোগসাজশের বিষয়টি। পাশাপাশি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ৯৯ জন হিন্দু নারী, পুরুষ ও শিশু হত্যা করে আরসা। ২০১৭ সালের আগস্টেও হিন্দু গ্রামবাসীদের ওপর আরসার হামলার ফলে হিন্দু ও অন্যান্য জাতিগত সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে মিয়ানমারে।
ডিডব্লিউ বলছে, কক্সবাজারে শুধু মাদক চোরাকারবার বা অন্যান্য অপরাধের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই রোহিঙ্গারা। বিদেশি মদদে তারা এখন সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের সঙ্গেও যুক্ত। জানুয়ারিতেই জনা চল্লিশেক রোহিঙ্গাকে শরণার্থী শিবিরের মধ্যেই জঙ্গি প্রশিক্ষণ দেয় জেএমবি।
২০১৬ সালে হোলি আর্টিজান কফি শপে আত্মঘাতী হামলার মধ্য দিয়ে জেএমবি গোটা দুনিয়ার নজরে আসে। জার্মান সংবাদ সংস্থার খবর, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ ও মালয়েশিয়া থেকে ১১৭ হাজার ডলার অনুদান পেয়েছিল জেএমবি। সে অর্থেই ৪০ জন রোহিঙ্গাকে জঙ্গি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আর পুরোটাই হয় পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের নজরদারিতে। পুরো বিষয়টি নজরে আসতেই ভারতের তরফে বাংলাদেশকে সতর্কও করা হয়েছিল বলে জানা গেছে।
বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে সাউথ এশিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোরামের বিশ্লেষক এস ও ওল্ফ জঙ্গি প্রশিক্ষণে আইএসআইয়ের জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ওল্ফের মতে আইএসআইয়ের লক্ষ্যই হলো আফগানিস্তান আর ভারতকে অস্থির করে তোলা। আর তারা সে কাজের জন্য এখন বাংলাদেশের মাটিতে রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করছে। কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালানো পাকিস্তানের পক্ষে এখন আর সহজ হচ্ছে না। তাই বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে ভারতে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালাতে চায় পাকিস্তান। আর সে লক্ষ্যেই ব্যবহৃত হচ্ছেন রোহিঙ্গারা। বিঘ্নিত হচ্ছে বাংলাদেশের শান্তি। পাকিস্তান মুক্তিযুদ্ধের প্রতিশোধ নিতে চাইছে। তাই মুসলিম ধর্মীয় আবেগকেও কাজে লাগানো হচ্ছে নাশকতার কাজে। তাই রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির হয়ে উঠছে জঙ্গি কার্যকলাপের আঁতুড়ঘর।
শুধু বাংলাদেশেই নয়, মে মাসে রোহিঙ্গা ভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন আরসার হামলায় মিয়ানমারের সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তারাও জখম হন। সীমান্তবর্তী গ্রামে জুনে আধঘণ্টার ওপর গুলির লড়াইও প্রমাণ করে আরসার কার্যকলাপ বৃদ্ধির। মিয়ানমারের গোয়েন্দারাও জানতে পেরেছেন কক্সবাজারে আরসা বেশ সক্রিয়। আরসার কারণেই মাদক চোরাকারবার বেড়ে গেছে কক্সবাজারে। চলছে নানা ধরনের কুকর্ম। পরিস্থিতির ফায়দা নিতে ময়দানে অবতীর্ণ পাকিস্তান।
সান নিউজ/বি. এম./বিএস