নিজস্ব প্রতিনিধি:
অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা গুলিতে নিহত হওয়ার পরদিন (ঈদুল আজহার দিন) ঢাকার এক আওয়ামী লীগ নেতার মাধ্যমে একজন মন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চালান টেকনাফের বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ।
৩১ জুলাই সিনহা হত্যাকাণ্ডের একদিন পর ঢাকার আওয়ামী লীগের একটি থানা কমিটির সভাপতির পদে থাকা ওই নেতাকে ফোনে প্রদীপ বলেন, মন্ত্রী বিষয়টি কতটুকু অবগত এবং পরবর্তীতে এটা নিয়ে কোনো ঝামেলা হবে কি না, তা যেন নিশ্চিত হয়ে তাকে জানানো হয়। আর কোনো সমস্যা হলেও যাতে তাকে (প্রদীপ) সমস্যায় পড়তে না হয়, সেটা মন্ত্রীকে জানাতে ওই নেতাকে অনুরোধ করেন প্রদীপ। প্রদীপ ও ঢাকার ওই নেতার ফোনালাপের একটি অডিওতে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
এদিকে ঈদের দিন ওই নেতা মন্ত্রীর বাড়িতে যান। সিনহা হত্যাকাণ্ড নিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করেন। তবে মন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীসহ সকলকে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। এই ঘটনায় দোষী কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
মন্ত্রীর বাড়ি থেকে বেরিয়ে ওই নেতা প্রদীপকে ফোন করেন। বলেন- ‘আপনি যেটা সকালে বলেছিলেন সেটা খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত বিষয়টি জেনে গেছেন। আপনি সাবধানে থাকবেন, হয়ত আপনাকেও গ্রেপ্তার করা হতে পারে।’
উত্তরে প্রদীপ বলেন, ‘আমি তো কিছু করিনি, সব তো অফিসাররা করেছে।’ এসময় বারবারই আওয়ামী লীগের ওই নেতা প্রদীপকে সাবধানে থাকতে বলেন। পরে তিনি মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
গত ৩১ শে জুলাই রাতে টেকনাফের পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ দিয়ে হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান। এই ঘটনায় টেকনাফ থানার ওসিসহ নয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে নিহতের বোন।