নিজস্ব প্রতিবেদক:
বরিশাল: সরকারি বরাদ্দের টাকায় অসহায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে ঘর তুলে দেওয়ার কথা বলে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর আদায় করেন উপজেলা পরিষদের সাবেক এক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। এরপর ঘর বাবদ চার লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন তিনি। তা না পেয়ে স্বাক্ষরযুক্ত ফাঁকা স্ট্যাম্পের বলে এখন তাদের জমিই অন্যের কাছে বিক্রি করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন ওই নারীনেত্রী। হয়রানির শিকার ওই মুক্তিযোদ্ধা পরিবার থানায় মামলা করেছেন।
বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ রাকুদিয়া এলাকায় অভিনব প্রতারণার এই ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রিফাত জাহান তাপসী ওই এলাকার মনিরুজ্জামান মনির হাওলাদারের স্ত্রী। প্রতারণার শিকার মৃত মুক্তিযোদ্ধা মিলন হাওলাদারের ছেলে নজরুল ইসলাম ও তার ৭০ বছরের বৃদ্ধা মা মনোয়ারা বেগম।
শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) বরিশাল প্রেসক্লাব মিলনায়তনে তাপসীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটির সদস্যরা এ ঘটনার প্রতিকার কামনা করেছেন।
হয়রানির শিকার নজরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, গত ২৯ জুলাই মুক্তিযোদ্ধাদের সরকারি ঘর দেওয়ার কথা বলে তাকে ও তার মা মনোয়ারা বেগমকে ডেকে নেন রিফাত জাহান তাপসী। তাপসী তার সরকারি কোয়ার্টারে বসে ১০০ টাকার দুটি সাদা স্ট্যাম্পে তার ও তার মায়ের স্বাক্ষর নেন।
তারা পরে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মুক্তিযোদ্ধাদের ঘর পেতে কোনো স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর লাগে না। পরে তারা ওই স্ট্যাম্প ফেরত চাইলে তাপসী তা না দিয়ে আরো চার লাখ টাকা দাবি করেন।
দবিকৃত টাকা না দিলে ভুক্তভোগীদের বরিশালের উজিরপুর উপজেলার কালিরবাজারে থাকা জমি অন্যের কাছে বিক্রি করে টাকা নেবেন বলেও হুমকি
দেন তাপসী। পরে তারা স্ট্যাম্প ফেরত চেয়ে মামলা করেন। ওই মামলায় তাপসীর স্বামী রাকুদিয়া এলাকার মনিরুজ্জামান মনির হাওলাদারকে ৪নং সাক্ষী রাখা হয়েছে। তাপসীর বিরুদ্ধে এলাকায় আরো একাধিক অভিযোগ রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।
নজরুল ইসলাম আরো বলেন, ‘আমাদের উজিরপুরের কালিরবাজার এলাকায় থাকা সামান্য কিছু সম্পত্তি আত্মসাতের লক্ষ্যে সাবেক এই মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রত্যারণার ফাঁদ তৈরি করেন। তিনি বিভিন্নভাবে আমাদেরকে হুমকি দিয়ে ওই জমি বিক্রি করতে চাচ্ছেন। বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, জমি বিক্রির জন্য তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ওই জমি বিক্রি করে দিলে আমরা পথে বসে যাবো।’
ওই এলাকার মুক্তিযোদ্ধা সার্জেন্ট জাহাঙ্গীর বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। নজরুলের বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধ ছিলেন। তারা নিয়মিত ভাতাও পাচ্ছেন। এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা। আমরা মৌখিকভাবে বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছি। আমরাও এর ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে রিফাত জাহান তাপসীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।