নিজস্ব প্রতিবেদক:
ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার সামনে আচমকা রুদ্রমূর্তি ধারণ করা এক যুবকের ছুরিকাঘাত থেকে পুলিশ সদস্যসহ পথচারীদের বাঁচাতে গিয়ে আহত হয়েছেন পরিদর্শক (তদন্ত) মুহাম্মদ শাহজাহান। হামলাকারীর ছুরির আঘাতে পুলিশ সদস্য ড্রাইভার সাধনও আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে থানার সামনে শহরের খালপাড় সড়কে এই ঘটনা ঘটে। হামলাকারী শহরের পুনিয়াউট গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে মোবাশ্বেরকে (৩০) তৎক্ষণাৎ আটক করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মুজিবুর রহমান ওই যুবকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলের দিকে সদর মডেল থানা ফটকের সামনের সড়কে ওই যুবক মোবাশ্বের পাঁয়চারি করতে থাকলে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য তাকে কারণ জিজ্ঞাসা করেন। এতে রাগান্বিত হয়ে মুহূর্তেই কোমর থেকে ছুরি বের করে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যকে ভয় দেখান। এ সময় চ্যালেঞ্জ করলে মোবাশ্বের তার ওপর হামলা করতে উদ্যত হলে পুলিশের ওই সদস্য কৌশলে তাকে প্রতিরোধ করতে থাকেন। ডাকাডাকিতে ফটক লাগোয়া ডিউটি অফিস ও ক্লাবঘর থেকে অন্য পুলিশ সদস্যরাসহ থানার অফিসকক্ষ থেকে ছুটে আসেন পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মুহাম্মদ শাহজাহান। তিনি হামলাকারীর আক্রমণ থেকে সবাইকে সাবধান করে ওই যুবকের দৃষ্টি কাড়েন তার দিকে। এতে হামলাকারীকে পেছন দিক থেকে ধরার কিছুটা সুযোগ পান অন্য পুলিশ সদস্যরা।
সাধারণ এ ট্রিকসটি (কৌশল) না বুঝে মোবাশ্বের এলোপাতাড়ি ছুরি চালাতে চালাতে এগিয়ে যান সামনে থাকা মুহাম্মদ শাহজাহানের দিকে। তখন হামলাকারীর ছুরির আঘাত এড়িয়ে তিনি কৌশলে হামলাকারীর এক হাত ধরে ফেলতে পারলেও অন্য হাতটি ঝটকা মেরে ছুটিয়ে নিয়ে এফোড়-ওফোড় আঘাত করতে থাকেন। এতে শাহজাহানের বাম হাতের দুটি আঙ্গুল ছুরির আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হয়। এলোপাতাড়ি ছুরির আঘাতে আরেক পুলিশ সদস্য ড্রাইভার সাধনও আহত হন। তখন মুহাম্মদ শাহজাহানসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য মিলে হামলাকারীকে জাপটে ধরে আটক করেন। পরে তাকে থানাহাজতে হেফাজতে নেওয়া হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শরিফুল ইসলাম জানান, ‘যুবকটি মানসিক বিকারগ্রস্ত কি না এখনই বলা যাচ্ছে না। আদালত অনুমতি দিলে তার শারীরিক পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর এ বিষয়ে বলা যাবে।’
পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘আমি হাতের দুই আঙুলে আঘাত পেয়েছি। এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না, কেন ওই যুবক এমন করলেন। পরে বিস্তারিত বলা যাবে।’