নিজস্ব প্রতিবেদক:
খুলনা: খুলনায় ঠিকাদার ইউসুফ আলীর করা ‘চাঁদাবাজির’ মামলায় গ্রেপ্তারকৃত চার যুবকের রিমান্ডের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
ওই চার যুবক হলেন, যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার মো. মোস্তফা বিশ্বাসের ছেলে মোহাম্মদ আবু সাঈদ ওরফে শাহেদ (২২), বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার মল্লিক আব্দুল হাইয়ের ছেলে মো. ইসমাইল মল্লিক (২৭), খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার শেখ হাবিবুর রহমানের ছেলে মো. মেহেদী হাসান (২১) ও দৌলতপুর থানার ৬নং ওয়ার্ডের মো. মিজানুর রহমান শেখের ছেলে মো. সাইফুল ইসলাম (২৩) ।
গত শুক্রবার (২৮ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে মহানগরীর মিস্ত্রিপাড়া আরাফাত জামে মসজিদ এলাকার ইউসুফ আলী তার বাড়িতে আসা ওই চার যুবককে গুলি করলে তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে বাম পায়ে বিদ্ধ হয়ে আহত হয় পাশের বাড়ির ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী লামিয়া। পরে মেয়ের প্রেমিকা শাহেদ ও তার তিন বন্ধুর বিরুদ্ধে ইউসুফ আলী থানায় চাঁদাবাজির মামলা করেন। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।
মঙ্গলবার (০১ সেপ্টেম্বর) সকালে মামলার তদন্তকারী কমকর্তা খুলনা সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাঈদুর রহমান ওই চারজনকে খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আমিরুল ইসলামের আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিন করে রিমান্ডের আবেদন জানান। শুনানি শেষে রিমান্ডের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন আদালত।
এদিকে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ঠিকাদার ইউসুফ আলীর ছোড়া গুলিতে আহত লামিয়া আগের তুলনায় একটু সুস্থ। তাকে পোস্ট অপারেটিভ থেকে সার্জারি ওয়ার্ডে নেওয়া হয়েছে। ঘটনার ৭০ ঘণ্টা পর সোমবার (৩১ আগস্ট) সকালে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লামিয়ার বাম পায়ে সফল অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকরা। দুই ঘন্টার অপারেশনে বিদ্ধ হওয়া গুলিটি বের করা হয়। বিকেলে তাকে পোস্ট অপারেটিভ থেকে সার্জারি ওয়ার্ডে নেওয়া হয়।
খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ও অর্থপেডিক্স বিভাগের প্রধান ডা. মেহেদী নেওয়াজ বলেন, গুলি বের হওয়ায় লামিয়া এখন সম্পূর্ণ শঙ্কামুক্ত। তবে পুরোপুরি সুস্থ হতে কিছুদিন সময় লাগবে।
ঠিকাদার ইউসুফ আলীর বাড়িতে গিয়েছিলেন তার মেয়ে রুকাইয়ার প্রেমিক শাহেদ ও তার তিন বন্ধু। তাদের প্রেমের সম্পর্কে কথা বলতেই ক্ষিপ্ত হয়ে হুমকি দেন ঠিকাদার। পরিস্থিতি খারাপ বুঝে রুকাইয়ার মামা তাদের বের হয়ে যেতে বলেন। তারা বের হতে না হতেই পিস্তল হাতে বেরিয়ে পড়েন ঠিকাদার। পরে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। গুলির শব্দ শুনে পাশের বাড়ির জামাল হোসেনের ১৫ বছরের মেয়ে লামিয়া কৌতুহলবশত ঠিকাদারের বাড়ির সামনে যায়। ঠিক সেই সময় একটি গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে বিদ্ধ হয় তার বাম পায়ে। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকে হাসপাতালে তিনদিন ব্যথার যন্ত্রণায় ছটফট করছিলো লামিয়া।
নিজেকে বাঁচাতে ও ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নিতে ইউসুফ তার মেয়ের প্রেমিক ও প্রেমিকের বন্ধুদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা করেছেন বলে অভিযোগ গ্রেপ্তারকৃতদের স্বজনদের।
সান নিউজ/ এআর