নিজস্ব প্রতিবেদক:
যশোর: যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে তিন কিশোর খুন ও ১৫ জন আহতের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো (শ্যোন অ্যারেস্ট) আট কিশোরকে চারদিন করে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) যশোর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ টি এম মুসার আদালত শুনানি শেষে আসামিদের কেন্দ্রের মধ্যে আলাদা কক্ষে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চাঁচড়া পুলিশফাঁড়ির পরিদর্শক রকিবুজ্জামান গত ২০ আগস্ট ওই আট আসামিকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে সাতদিনের জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চেয়ে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করেন। আদালত আবেদনটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়ে দেন। এরপর ২৭ আগস্ট শুনানির দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।
শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের বন্দি আট কিশোর হচ্ছে- গাইবান্ধার খালিদুর রহমান তুহিন, নাটোরের হুমাইদ হোসেন ও মোহাম্মদ আলী, পাবনার ইমরান হোসেন ও মনোয়ার হোসেন, রাজশাহীর পলাশ ওরফে শিমুল ওরফে পলান, কুড়িগ্রামের রিফাত আহমেদ ও চুয়াডাঙ্গার আনিছুজ্জামান।
গত ১৬ আগস্ট আদালতের নির্দেশে ওই আট কিশোরকে মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা রোকিবুজ্জামান বন্দি থাকা আট কিশোরকে গ্রেপ্তার দেখাতে আবেদন জানিয়েছিলেন।
গত ১৩ আগস্ট দুপুরে মারপিটে তিন কিশোর নিহত ও ১৫ জন আহত হওয়ার পরদিন ১৪ আগস্ট রাতে নিহত কিশোর পারভেজ হাসান রাব্বির বাবা রোকা মিয়া কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলাটি করেন। মামলায় শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষকে আসামি করা হয়।
পুলিশ এ মামলায় কেন্দ্রের গ্রেপ্তারকৃত পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারী বরখাস্তকৃত তত্ত্বাবধায়ক (সহকারী পরিচালক) আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, সহকারী তত্ত্বাবধায়ক (প্রবেশন কর্মকর্তা) মাসুম বিল্লাহ, ফিজিক্যাল সাইকো সোশ্যাল ইন্সট্রাক্টর শাহানূর এবং কাউন্সিলর মুশফিকুর রহমান ও ওমর ফারুককে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
ওই ঘটনায় সমাজসেবা অধিদপ্তর ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় গঠিত পৃথক দুটি কমিটি তদন্ত করেছে। আর কেন্দ্রের পাঁচ কিশোর বন্দি আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছে।
কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ও নির্দেশে আনসার সদস্য ও কয়েকজন কিশোর গত ১৩ আগস্ট দুপুরে অন্তত ১৮ জন বন্দি কিশোরকে বেধড়ক মারপিট করেন। মারপিট ও নির্যাতনে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের ফেলে রাখা হয়। কয়েকজন অচেতন থাকায় তারা অজ্ঞান হয়ে গেছে মনে করলেও পরে কর্মকর্তারা বুঝতে পারেন, তারা মারা গেছে। এরপর সন্ধ্যার পর এক এক করে তিনজনের মরদেহ হাসপাতালে এনে রাখা হয়। আহত ১৫ জনকেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নিহতরা হলো, বগুড়ার শিবগঞ্জের তালিবপুর পূর্বপাড়ার নান্নু পরমানিকের ছেলে নাঈম হোসেন (১৭), একই জেলার শেরপুর উপজেলার মহিপুর গ্রামের আলহাজ নুরুল ইসলাম নুরুর ছেলে রাসেল ওরফে সুজন (১৮) এবং খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা পশ্চিম সেনপাড়ার রোকা মিয়ার ছেলে পারভেজ হাসান রাব্বি (১৮)।
সান নিউজ/ এআর