নিজস্ব প্রতিবেদক:
ব্রাহ্মণবাড়িয়া: বাঞ্ছারামপুর উপজেলার চাঞ্চল্যকর ভাই-বোন হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। থাপ্পড়ের শোধ তুলতে মেহেদী হাসান কামরুল (১০) ও তার বোন শিফা আক্তারকে (১৪) গলাকেটে খুন করেন মামা বাদল মিয়া (৩০)। গ্রেপ্তারের পর ভাগ্নে-ভাগ্নিকে খুনের দায় স্বীকার করেছেন ঘাতক বাদল।
বুধবার (২৬ আগস্ট) রাতে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা (ডিএসবি) বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বাদল কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলার খোদে-দাউদপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রবের ছেলে। গত মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) দিবাগত মধ্যরাতে ঢাকার সবুজবাগ থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, বাহরাইন প্রবাসী বাদল গত মার্চ মাসে দেশে ফিরে আসেন। গ্রামে গোষ্ঠিগত দাঙ্গার মামলায় আসামি হওয়ায় বাঞ্ছারামপুরের ছলিমাবাদ ইউনিয়নের সাহেবনগর গ্রামে তার বোন হাসিনা আক্তারের বাড়িতে আশ্রয় নেন। প্রবাসে থাকাকালে দোকান করতে ভগ্নিপতি কামাল উদ্দিনের কাছ থেকে ১৩ লাখ টাকা ধার নেন বাদল। এর মধ্যে তিন লাখ টাকা ফেরত দেন। বাকি ১০ লাখ টাকার জন্য কামালের সঙ্গে মনোমালিন্য চলছিল তার। এর জেরে সপ্তাহখানেক আগে বাদলকে থাপ্পড় মারেন কামাল। এ ঘটনায় প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করেন বাদল।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ আগস্ট দুপুর আড়াইটার দিকে কামালের ছেলে কামরুল তার মামা বাদলের রুমে যায়। বাদল তখন রুমে উচ্চস্বরে গান বাজাচ্ছিলেন। এ সময় প্রতিশোধপরায়ন হয়ে কামরুলের হাত-পা বেঁধে গলা কেটে তাকে হত্যা করেন বাদল। পরে মরদেহ খাটের নিচে লুকিয়ে রাখেন। ভাগ্নি শিফা রুম ঝাড়ু দিতে গিয়ে দেখে ফেললে তাকেও মারতে ধ্বস্তাধস্তি করেন বাদল। একপর্যায়ে শিফাকে ধাক্কা মেরে বাথরুমে নিয়ে তাকেও গলা কেটে হত্যা করে মরদেহ অন্য একটি রুমের খাটের নিচে রেখে দেন।
বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ আরও জানিয়েছে, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় মাগরিবের আজান হওয়ার পরও কামরুলকে না পেয়ে সবাই খুঁজতে বাইরে বের হন। কিছুক্ষণ পর শিফাকেও দেখতে না পেয়ে এলাকায় মাইকিং করা হয়। এরই মধ্যে বাদলকে সঙ্গে নিয়ে বাঞ্ছারামপুর ফেরিঘাট এলাকায় কামরুল ও শিফাকে খুঁজতে যান কামাল। কিন্তু কামালকে না বলেই বাদল সেখান থেকে পালিয়ে যান। পরে ঢাকার সবুজবাগ থানা এলাকা থেকে বাদলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় বুধবার (২৬ আগস্ট) নিহতদের বাবা কামাল শ্যালক বাদলের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন।
বাঞ্ছারামপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রাজু আহমেদ জানান, মামলার তদন্ত কাজ শুরু হয়েছে।
সান নিউজ/ এআর