নিজস্ব প্রতিবেদক:
বহুল আলোচিত দুই ভাই বরকত-রুবেলের দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি নিশান মাহমুদ শামীম। ঢাকার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পর তাকে কেরাণীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মানিলন্ডারিং মামলাটিতে গ্রেপ্তারকৃত শামীমকে তিনদিনের রিমান্ড শেষে বুধবার (২৬ আগস্ট ) আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এ সময় আসামি স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মতি জানান। পরে তা রেকর্ডের আবেদন জানানো হলে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবদাস চন্দ্র অধিকারীর আদালত তার জবানবন্দি নেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে গত ২২ আগস্ট নিশানের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। গত ২১ আগস্ট বিকালে ঢাকার উত্তরা এলাকা থেকে সিআইডির একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে।
গত ২৬ জুন শহর আওয়ামী লীগের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেলকে প্রধান আসামি করে অবৈধ উপায়ে দুই হাজার কোটি টাকা আয় ও পাচারের অভিযোগে ঢাকার কাফরুল থানায় মামলাটি দায়ের করে সিআইডি। সেই মামলায় আদালতের মাধ্যমে রুবেল ও বরকতকে পাঁচদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি। সে সময় এর সঙ্গে জড়িত অনেকের নাম প্রকাশ করেন তারা।
রুবেল-বরকতের স্বীকারোক্তি ও তথ্যানুসারে নিশান মাহমুদ শামীমকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে এই মামলায় আরও গ্রেপ্তার হয়েছেন শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার লেভী ও জেলা শ্রমিক লীগের অর্থ সম্পাদক বেল্লাল হোসেন।
গত ১৬ জুন রাতে শহরের গোয়ালচামট মোল্লাবাড়ি সড়কে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল সাহার বাড়িতে দুই দফা হামলার ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে সুবল চন্দ্র সাহা গত ১৮ জুন ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন। ৭ জুলাই পুলিশের বিশেষ অভিযানে সুবল সাহার বাড়িতে হামলার মামলায় গ্রেপ্তার হন ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান রুবেলসহ আরও সাতজন। এর পরে সিআইডি পুলিশ বরকত ও রুবেলের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে তদন্তে নামে। তদন্তে প্রাথমিকভাবে দুই হাজার কোটি টাকা অবৈধ উপায়ে অর্জন ও পাচারের তথ্য পাওয়া গেলে ঢাকার কাফরুল থানায় মামলাটি করে সিআইডি।
এ ঘটনার পর বরকতকে শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং রুবেলকে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
অ্যাডভোকেট সুবল সাহার বাড়িতে হামলার ঘটনার পর ফরিদপুরে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গতকাল পর্যন্ত ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে রয়েছেন শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার, জেলা শ্রমিক লীগের কোষাধ্যক্ষ বিল্লাল হোসেন, শহর যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসিবুর রহমান ফারহান ও ছাত্রলীগের সভাপতি নিশান মাহমুদ শামীম প্রমুখ।
সান নিউজ/ এআর