নিজস্ব প্রতিবেদক:
ফরিদপুর: ২০০৪ সালের ২৬ মার্চ ঢাকার সদরঘাট এলাকায় খুন হন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সামসুল হক ও তার ছেলে। ১৫৬ খণ্ড করে ওই ব্যবসায়ী বাবা-ছেলেকে হত্যা করা হয়েছিল। সেই জোড়া খুনের মামলার আসামি ঢাকার পেশাদার অপরাধী কাজল-ফারুক গ্রুপের সদস্য বাদশা মণ্ডলকে (৫০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে ফরিদপুর সদর উপজেলার চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের চরবালুধুমের বাড়ি থেকে।
বিশেষ অভিযানে দু’নলা বন্দুকের ২১ রাউন্ড গুলিসহ শনিবার (২২ আগস্ট) দিবাগত রাতে বাদশাকে গ্রেপ্তার করে ফরিদপুর ডিবি পুলিশ।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, ফরিদপুরের বাড়িতে ফেরার পর থেকেই মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছিলেন বাদশা মণ্ডল। জেলার সুবিধাবাদী নেতাদের ম্যানেজ করে কোতোয়ালি থানা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক পদ বাগিয়ে নেওয়ার পর আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। প্রতি রাতে তার বাড়িতে বসতো রমরমা মাদকের হাট। বিভিন্ন জেলা থেকেও তার কাছে অপরাধীরা আসতেন। ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানায় তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুনীল কুমার কর্মকার জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বাদশাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার সহযোগী অসংখ্য মামলার আসামি জামতলার জাহিদসহ কয়েকজন পালিয়ে যান। জাহিদেরও অপরাধ জগতে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহীনূর রহমান জানান, রোববার (২৩ আগস্ট) বিকেলে সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে বাদশা মণ্ডলকে জেলার মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত আগামী মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) রিমান্ডের শুনানির দিন ধার্য করে তাকে জেলা কারাগারে পাঠিয়ে দেন।
বাদশা মণ্ডলের দাবি, আগে তার একটি দোনলা বন্দুক ছিল। ওই বন্দুকের লাইসেন্স গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বাতিল করে জেলা প্রশাসন। তবে ওই বন্দুকের সঙ্গে গুলিগুলো জমা দেননি তিনি।
সূত্র জানায়, অনেক সম্পত্তির মালিক বাদশা মণ্ডল। নিজের বাড়ি ছাড়াও ঢাকায় তার একটি আটতলা ভবন ও সদরঘাট এলাকায় একটি খাবার হোটেলসহ আবাসিক হোটেল রয়েছে।
ডিবি পুলিশের ওসি সুনীল কর্মকার বলেন, লাইসেন্স বাতিল হওয়ার পর বন্দুকের সঙ্গে গুলিগুলোও জমা না দিয়ে আইনত অপরাধ করেছেন। এ বিষয়ে অস্ত্র আইনে একটি মামলা করা হয়েছে কোতোয়ালি থানায়। অন্য অপরাধের বিষয়েও তদন্ত ও তাকে জিজ্ঞাসাবাদের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সান নিউজ/ এআর