নিজস্ব প্রতিবেদক:
খুলনা: খুলনা মহানগরীর খানজাহান আলী থানার মশিয়ালী গ্রামের চাঞ্চল্যকর ট্রিপল মার্ডার মামলার গ্রেপ্তারকৃত আসামি মো. ইকবাল হোসেন ওরফে জুয়েল শেখ (৪০) ও তার ভাই মো. মুরাদুল ইসলাম ওরফে মুরাদ শেখ (৩২) আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারামতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
শুক্রবার (২১ আগস্ট) বিকালে তিনদিনের রিমান্ড শেষে হাজির করা হলে মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলামের আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করেন ওই দুই ভাই।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড) পিআর কানাই লাল সরকার জানান, সর্বশেষ গত মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) ভোররাতে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার সিদ্ধিরপাশা এলাকা থেকে এজাহারভুক্ত দুই আসামি জুয়েল শেখ (৪০) ও মুরাদ শেখকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। ওইদিনই আদালতের মাধ্যমে তিনদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয় তাদের।
তদন্তকারী কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক মো. এনামুল হক জানান, এ নিয়ে গ্রেপ্তারকৃত নয় আসামির মধ্যে পাঁচজন স্বীকারোক্তি দিলেন। অন্য তিনজন হলেন, মশিয়ালী গ্রামের মৃত হাসান আলী শেখের ছেলে মো. জাফরীন শেখ (৩২), মো. কুরবান শেখের ছেলে মো. আরমান শেখ (২০) ও মো. মোকছেদ শেখের ছেলে মো. আলমগীর শেখ (৩৮)। গ্রেপ্তার হয়ে রিমান্ড শেষে কারাগারে থাকা বাকি চারজন হলেন, মো. মোকছেদ শেখের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর শেখ (৩৫), মৃত আক্তার আকুঞ্জির ছেলে মো. রহিম আকুঞ্জি (২২), মো. ফারুকের ছেলে মো. রবিন (২০) ও মো. বাবুল শেখের ছেলে মো. মিঠু শেখ (৩৩)।
গ্রেপ্তারকৃত নয়জনকেই রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পলাতক ১৩ আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, গত ১৬ জুলাই রাতে মো. জাকারিয়া শেখ মশিয়ালী সিঅ্যান্ডবি’র ঘরের একটি কক্ষে তিন রাউন্ড বন্দুকের গুলি ও দুই রাউন্ড পিস্তলের গুলি নিজে রেখে ট্রিপল মার্ডার মামলার বাদীর চাচাতো ভাই মুজিবর শেখকে পুলিশে ধরিয়ে দেন। খবর পেয়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাদীসহ পাড়ার আরো কিছু লোক মুজিবরকে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার কারণ জানতে তিন সহোদর শেখ জাকারিয়া, মিল্টন ও জাফরিনের বাড়ির সামনে যান। এ সময় তাদের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডার একপর্যায়ে মিল্টন শেখ গুলি করলে নজরুল শেখ মারা যান। জাফরীন শেখ গুলি করলে গোলাম রসুল নিহত হন। শেখ জাকারিয়ার গুলিতে জখম হন বাদীর ছেলে সাইফুল ইসলাম। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তাদের অন্য সহযোগীদের গুলিবর্ষণে বাদীসহ অন্যরা পালিয়ে যান। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন আফসার উদ্দিন, তার ছেলে রবি, শামীম, খলিল, রানা ও সুজন শেখসহ আরও অনেকে। অন্যদিকে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী গণপিটুনি দিয়ে জাকারিয়া বাহিনীর সদস্য জিহাদ শেখকে হত্যা করেন। এ ঘটনায় মোট মৃত্যু হয় চারজনের।
নিহত তিনজনের একজন সাইফুলের বাবা মো. শাহিদুল শেখ মশিয়ালী এলাকার মৃত হাসান আলী শেখের চার ছেলেসহ ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১৫/১৬ জনকে আসামি করে খানজাহান আলী থানায় হত্যা মামলাটি করেন।
সান নিউজ/ এআর