নিজস্ব প্রতিবেদক : একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় যশোরের বাঘারপাড়া এলাকার ৪ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আরও পড়ুন : হিজবুত তাহরীরের শীর্ষ নেতা গ্রেফতার
রোববার (২৫ জুন) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন ৩ সদস্যের বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। এটি ট্রাইব্যুনালের ৫২ তম রায়।
মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামি হলেন- মো. আমজাদ হোসেন মোল্লা, মো. ওহাব মোল্লা, মো. মাহতাব বিশ্বাস ও মো. ফসিয়ার রহমান মোল্লা।
আরও পড়ুন : এক্সপ্রেসওয়েতে পুলিশসহ নিহত ২
রোববার সকাল ১০ টা ৩৫ মিনিটে রায় পড়া শুরু হয়। ১৬৯ পৃষ্ঠার এ রায়ের প্রথমাংশ পাঠ করেন বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম। রায়ের দুই-তৃতীয়াংশ পাঠ করেন বিচারপতি মো. আবু আহমেদ জমাদার এবং মূল অংশ পাঠ করেন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম।
রায় ঘোষণাকালে এ মামলায় গ্রেফতার হওয়া একমাত্র আসামি মো. আমজাদ হোসেন মোল্লা আসামির কাঠগড়ায় ছিলেন।
আরও পড়ুন : যুক্তরাষ্ট্রে গোলাগুলিতে হতাহত ১৭
গত ২১ জুন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মো. আমজাদ হোসেন মোল্লাসহ ৪ আসামির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।
এর আগে গত ১১ মে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে যশোরের বাঘারপাড়ার মো. আমজাদ হোসেন মোল্লাসহ ৫ আসামির বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। আসামিরা হলেন- মো. আমজাদ হোসেন মোল্লা, মো. ওহাব মোল্লা, মো. মাহতাব বিশ্বাস, মো. ফসিয়ার রহমান মোল্লা ও মো. নওশের বিশ্বাস।
আরও পড়ুন : জি কে শামীমের মামলার রায় আজ
এর মধ্যে অন্য মামলায় গ্রেফতার থাকা আমজাদ হোসেন মোল্লাকে ২০১৭ সালের ২২ মে এ মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়। বাকি ৪ জন ছিলেন পলাতক। তবে পলাতকদের মধ্যে নওশের বিশ্বাস নামে এক আসামি মারা গেছে।
প্রসিকিউশন থেকে জানানো হয়, মামলায় ৪ আসামির মধ্যে আমজাদ গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছে। বাকি ৩ জন পলাতক। আগে মামলায় মোট আসামি ছিলেন ৫ জন। তাদের মধ্যে একজন মারা গেছে।
আরও পড়ুন : ডিএমপির অভিযানে গ্রেফতার ৪৩
২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল এ মামলার তদন্ত শুরু হয়। তদন্ত শেষ হয় ২০১৮ সালের ১৬ এপ্রিল। যশোর জেলা প্রশাসকের দেওয়া রাজাকারদের তালিকাতেও আসামিদের নাম রয়েছে।
আসামিদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো রয়েছে-
১) ১৯৭১ সালের ৩ ভাদ্র বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে বাঘারপাড়া থানার উত্তর চাঁদপুর গ্রামের মো. ময়েনউদ্দিন ওরফে ময়নাকে তার বাড়ি থেকে আটক করে প্রেমচারা রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে যায় মো. আমজাদ হোসেন মোল্লা ও তার সহযোগীরা। সেখানে ৩ন দিন আটকে রেখে নির্যাতন করে ৬ ভাদ্র দুপুর ১২ টার দিকে খুড়দা গ্রামের বিজয় দাশের দেবদারু বাগানে কুয়ার পাশে দাঁড় করিয়ে ময়নাকে গুলি করে হত্যা করে মো. আমজাদ হোসেন মোল্লা।
আরও পড়ুন : প্রিগোজিনের পরিকল্পনা জানত যুক্তরাষ্ট্র
২) ১৯৭১ সালের ২০ জুলাই দুপুর ১ টার দিকে আমজাদ হোসেন মোল্লা ও তার সহযোগীরা বাঘারপাড়া খাজুরা বাজার থেকে ডা. নওফেল উদ্দিন বিশ্বাসকে আটক করে প্রেমচারা রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে যায়। পরদিন দুপুর ১২ টায় তাকে থানা সদরের মহিরাম গ্রামের মাঠে গুলি করে করে হত্যা করা হয়।
৩) আমজাদ হোসেন মোল্লা ও তার সহযোগীরা ১৯৭১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর সকাল ৮/৯ টার দিকে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তাকারী সুরত আলী বিশ্বাস ও মোক্তার বিশ্বাসকে তাদের বাড়ি থেকে ধরে প্রেমচারা রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখানে ৩ দিন নির্যাতনের পর ২৩ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২ টার দিকে খুড়দা গ্রামের বিজয় দাশের দেবদারু বাগানে কুয়ার পাশে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যার পর লাশ কুয়ায় ফেলে দেয়।
সান নিউজ/এনজে