নিজস্ব প্রতিবেদক:
ফরিদপুর: ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামটে কিশোরীকে গণধর্ষণের মামলায় চার তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ১৪ বছরের ওই কিশোরীকে গণধর্ষণের নয়দিন পরে ঘটনা জানাজানি, মামলা ও চার তরুণ গ্রেপ্তার হওয়ায় শহরজুড়ে চাহ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন, শহরের গোয়ালচামটের মোল্লাবাড়ী সড়ক বিহারি কলোনি এলাকার আসিবুর রহমান আপন (২৪), ইমরান শেখ (২৪), পাপন শেখ (২৩) ও নান্নু শেখ (২৩)। বুধবার (১৯ আগস্ট) রাত থেকে বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তারের পর ওই চার তরুণকে কোতোয়ালি থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। শুক্রবার (২১ আগস্ট) তাদের আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে।
গত ১১ আগস্ট রাতে গণধর্ষণের শিকার হয় ওই কিশোরী। ধর্ষকদের হুমকিতে অসহায় পরিবারটি আইনের আশ্রয় নেওয়াসহ কিশোরীর চিকিৎসা করাতে পারেনি। নয়দিনের মাথায় বুধবার ওই কিশোরী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর গণধর্ষণের ঘটনাটি জানাজানি হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে পাঁচ তরুণের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন কিশোরীর বাবা।
এরপর পুলিশ অভিযানে নেমে চারজনকে গ্রেপ্তার করলেও আসামি একই এলাকার মালেক সরদার (২৪) এখনো পলাতক।
মামলার এজাহার অনুসারে, ওই কিশোরীর বাবা অসুস্থ ব্যাক্তি। গত ১১ আগস্ট মাগরিবের নামাজের পর মেয়েটি গোয়ালচামটের লাক্সারি হোটেল সংলগ্ন এলাকায় অসুস্থ বাবার জন্য ওষুধ কিনতে যায়। ওই সময় পাঁচজন তরুণ ওই কিশোরীকে জাপটে ধরে মুখ আটকে শ্রীঅঙ্গণ এক নম্বর গলির মাথায় সন্তোষ সাহার বাড়ির পেছনের একটি ভিটায় নিয়ে যান।
ওই কিশোরীকে ওই ভিটায় নেওয়ার পর আসিবুর রহমান আপন, ইমরান শেখ ও পাপন শেখ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন। এ কাজে পাহারা দিয়ে ওই তরুণদের সাহায্য করেন নান্নু শেখ ও মালেক সরদার।
পরে কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়লে রাত নয়টার পরে তাকে শ্রীঅঙ্গণ পুকুর পাড়ে রেখে যান বখাটেরা। যাওয়ার সময় তারা এ ঘটনা কাউকে না জানাতে ভয়-ভীতি দেখান।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রাশেদুল ইসলাম বলেন, বুধবার ওই কিশোরী হাসপাতালে ভর্তি হলে জঘণ্য ও মর্মান্তিক এই গণধর্ষণের ঘটনাটি পুলিশের গোচরে আসে। পরে মেয়েটির সঙ্গে কথা বলে বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গণধর্ষণে জড়িত চার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই কিশোরীর বাবা বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে পাঁচ তরুণকে আসামি করে গণ ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলাটি করেন। গ্রেপ্তার হওয়া ওই তরুণদের কোতোয়ালি থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে যাবতীয় আইগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
শুক্রবার গণধর্ষণের মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া ওই তরুণদের জেলার মূখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে সোপর্দ করা হবে।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, গণধর্ষণের শিকার ওই কিশোরী বর্তমানে হাসপাতালের লেবার ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। শুক্রবার তাকে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) স্থানান্তর করা হবে।
সান নিউজ/ এআর