নিজস্ব প্রতিনিধি:
গোপালগঞ্জ: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ৪৯টি কম্পিউটার চুরির ঘটনায় এক ছাত্রসহ চোরচক্রের সাতজনকে গ্রেপ্তার ও ৩৪টি কম্পিউটার জব্দ করেছে। অন্যদিকে কম্পিউটার চুরিতে জড়িত থাকার অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়েছে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি পলাশ শরীফকে।
গত কোরবানির ঈদের ছুটির মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি একুশে ফেব্রুয়ারি ভবনের পেছন দিকের জানালা ভেঙে ৪৯টি কম্পিউটার চুরির ঘটনা ঘটে। ঈদের ছুটি শেষে গত ৯ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হলে কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। এ ঘটনায় গত ১০ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. প্রফেসর নূরউদ্দিন আহমেদ গোপালগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেন।
গত বৃহস্পতিবার রাতে (১৩ আগস্ট) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকার মহাখালীর ‘জিসান ইন্টারন্যাশনাল’ হোটেলে অভিযান চালিয়ে একটি কক্ষ থেকে ৩৪টি কম্পিউটার জব্দ করা হয়। পরে ঢাকার ক্রিস্টাল ইন হোটেল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার ইন্দাকচর গ্রামের মৃত সেলিম মিয়ার ছেলে মো. দুলাল মিয়া (৪৫) ও ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানার চোরখাই গ্রামের মৃত ময়েজ উদ্দিনের ছেলে মো. হুমায়ুন কবিরকে (২৪)। ওই তিনজনের দেওয়া তথ্যানুসারে এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় আরো পাঁচজনকে। তারা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ও গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মেরী গোপীনাথপুর গ্রামের বিল্লাল শরীফের ছেলে মাসরুল ইসলাম পনি শরীফ (২৩), একই উপজেলার বরফা শেখ পাড়া গ্রামের আবুল হোসেন শেখের ছেলে আ. রহমান সৌরভ শেখ (১৯), বরফা মধ্যপাড়া আইয়ুব শেখের ছেলে হাসিবুর রহমান শান্ত ওরফে কাকন (১৯), বরফা গ্রামের কামাল পাশা মিনার ছেলে নাইম উদ্দিন (১৯) ও মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার বিশমপুরদী গ্রামের সালাম হাওলাদার ছেলে নাজমুল হাসান (১৯)।
শনিবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা দুলাল মিয়া ও মো. হুমায়ুন কবির জিজ্ঞাসাবাদে জানান, হোটেল ব্যবসায়ী গোপীনাথপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি পলাশ শরীফসহ একটি চক্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার চুরির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এরপর শুক্রবার (১৪ আগস্ট) রাত সোয়া ১২টায় গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহেদ মাহমুদ বাপ্পী ও সাধারণ সম্পাদক মোল্লা মো. ফিরোজ মাহমুদ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কম্পিউটার চুরিতে জড়িত থাকার অভিযোগে পলাশ শরীফকে জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশে বহিষ্কারের কথা জানান। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাকে সংগঠনের সকল প্রকার কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকারও আদেশ দেওয়া হয়েছে।
পলাশ শরীফ গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তার ভাই আমিনুল ইসলাম শরীফ ওরফে লাচ্চু শরীফ একই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
চুরির সঙ্গে আরো অনেকেই জড়িত রয়েছেন জানিয়ে তাদেরকেও দ্রুত গ্রেপ্তারের আশা প্রকাশ করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান।
সান নিউজ/ এআর