নিনা আফরিন ,পটুয়াখালী : পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের উত্তর কাকড়াবুনিয়া গ্রাম থেকে ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা মনি আক্তার (২২) ও গোলখালী গ্রামের নিজ বাড়ী থেকে তিন সন্তানের জননী লাভলী বেগম (৩৫) নামে দুই গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।
আরও পড়ুন : কুষ্টিয়ায় মদ পানে ৩ মৃত্যু
গত রোববার (২৩ এপ্রিল) উপজেলার কাকড়াবুনিয়া থেকে সকাল ১০টা ও গোলখালী গ্রাম থেকে রাত ৮টার দিকে নিহতদের নিজ নিজ বাড়ী থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পটুয়াখালী মর্গে প্রেরণ করেছে পুলিশ। এ ব্যাপারে মির্জাগঞ্জ থানায় পৃথক দু’টি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। নিহত গৃহবধূদ্বয় মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন বলে স্বজনরা পৃথকভাবে দাবী করেন।
পুলিশ, এলাকাবাসী ও স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, নিহত মনি আক্তার (২২) কাকড়াবুনিয়া ইউনিয়নের উত্তর কাকড়াবুনিয়া গ্রামের শাহাদাত হোসেন বাবুর স্ত্রী। তিনি ২/৩ বছর ধরে মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। এর আগেও সে একাধিকবার গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করছিলেন।
আরও পড়ুন : খাগড়াছড়িতে বিজিবি মহাপরিচালক
ঘটনার সময় রোববার (২৩ এপ্রিল) সকালে তার স্বামী বাজারে এবং শ্বাশুড়ি কোহিনুর বেগম ভিক্ষাবৃত্তির কাজে বাহিরে চলে যান। সকালে ১০টার দিকে একই বাড়ীর প্রতিবেশী হাফসা বেগম ঘরের সামনে গিয়ে তাকে (মনি আক্তার) ডাক দিলে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে ঘরের ভিতরে গিয়ে মনি আক্তারকে ঘরের আড়ার সাথে গলায় ওড়না পেচানো অবস্থায় ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে ডাক-চিৎকার দেয়।
এসময় বাড়ীর অন্যান্য লোকজন ছুটে গিয়ে গরায় পেচাঁনো ওড়না কেটে নিচে নামিয়ে স্বজন ও থানা পুলিশে খবর দেয়। পরে স্বজনরা এসে থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মনি বেগমের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পটুয়াখালী মর্গে প্রেরণ করেন।
আরও পড়ুন : সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে ৬ কৃষকের মৃত্যু
অপরদিকে একইদিন রোববার (২৩ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে উপজেলার দেউলী সুবিদখালী ইউনিয়নের গোলখালী গ্রামে তিন সন্তানের জননী লাভলী বেগম (৩৫) এর ঝুলন্ত লাশ নিজ ঘর থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত গৃহবধূ ওই গ্রামের আলী হোসেন সিকদারের স্ত্রী এবং এক ছেলে ও দুই মেয়ের জননী ছিলেন।
এলাকাবাসী ও স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, লাভলী বেগম দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। তার স্বামী আলী হোসেন সিকদার স্থাণীয় গোলখালী বাজারে চায়ের দোকান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। ঈদের সময় দোকানে ক্রেতাদের ভীড় থাকায় সন্ধ্যার সময় নিহত লাভলী বেগমের স্বামী, সন্তান ও শ্বশুর নিজেদের চায়ের দোকানে ব্যস্ত ছিলেন।
আরও পড়ুন : কক্সবাজারে ১০ মরদেহ উদ্ধার
নিহতের শ্বশুর হাকিম সিকদার ৮টার দিকে বাড়ীতে গিয়ে পূত্রবধূ লাভলী বেগমকে ঘরের আড়ার সাথে গলায় রশি পেচাঁনো ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। তাৎক্ষনিক তিনি গোলখালী বাজারে দোকানে গিয়ে ছেলে ও নাতি সহ দোকানে উপস্থিত লোকজনকে এই ঘটনার কথা বলেন। পরে স্থানীয়রা মির্জাগঞ্জ থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় লাভলী বেগমের লাশ উদ্ধার করেন। স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আতিকুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মির্জাগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, মনি আক্তার ও লাভলী বেগম নামের দুইজন গৃহবধূর গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মর্গে প্রেরণ করেছি। উত্তর কাকড়াবুনিয়া গ্রাম থেকে উদ্ধারকৃত নিহত মনি আক্তার ৩মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। নিহতদের শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন : ঈদের রাতে আগুনে পুড়লো ৩৪ দোকান
উভয় পরিবারের স্বজনদের পক্ষ থেকে পৃথক দুইটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন প্রাপ্তির পরে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
সান নিউজ/এইচএন