নিজস্ব প্রতিবেদক:
মেজর সিনহা হত্যার অভিযোগে পুলিশের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কঠোর অবস্থান দেখে ভুক্তভোগী অনেকেই এখন পুলিশের অপকর্মের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস করছেন। কক্সবাজারে পুলিশের সংগঠিত অপরাধের পর থেকেই একের পর এক অভিযোগ সামনে আসছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
এরই মধ্যে চাঁদাবাজির অভিযোগে রাজশাহী রেঞ্জের পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেনের (৪৮) বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
বুধবার (১২ আগস্ট) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ দিদার হোসাইনের আদালতে গোলাম মোস্তফা ওরফে আদর এ মামলাটি করেন। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী। সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী সালাউদ্দিন গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বাদী গোলাম মোস্তফা আদর একজন ব্যবসায়ী। পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ব্যবসায়ী গোলাম মোস্তফা ওরফে আদরের কাছ থেকে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেন এবং তা আদায়ে হুমকি ধামকি দিতেন।
তিনি জানান, আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
বাদী আদর সাবেক আইজিপি ড. জাবেদ পাটোয়ারীর নিকটাত্মীয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, সাবেক আইজিপি ড. জাবেদ পাটোয়ারীর অফিসে দুই বছর পূর্বে বেলায়েত হোসেনের সাথে পরিচয় হয় আদরের। এরপর তাদের মাঝে ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সুবাধে আদরের বাবা গোলাম মোহাম্মদের কাছ থেকে বেলায়েত হোসেন বাড়ির জমি রেজিস্ট্রি করতে গত বছরের ১১ আগস্ট পাঁচ লাখ টাকা ঋণ নেন। ওই টাকা আসামি গত ১৫ মার্চ চেক প্রদান করেন। পরদিন আদর চেকটি উত্তোলন করেন।
গত ৪ এপ্রিল আসামি বেলায়েত হোসেন বাদী আদরের বাবার কাছে একজন লোক পাঠান। তিনি নিজেকে ডিবির অফিসার পরিচয় দেন। তখন আসামি বাদীর বাবাকে ফোন দিয়ে বলেন, পাঁচ লাখ টাকা না দিলে তার ছেলের অসুবিধা হবে। পরে বাদীর বাবা পাঁচ লাখ টাকার একটি চেক বেলায়েত হোসেনের নামে দেন। গত ১০ এপ্রিল বাদীর সাথে তার বাবার কথা হয়। বাদী জানতে পারেন ঘটনা কিছু না মিথ্যাভাবে ব্ল্যাকমেইল করে বেলায়েত হোসেন টাকাটি নিয়েছেন। পরে বাদীর বাবা ব্যাংককে চেকটি পাস না করার তথ্য দেন।
গত ৮ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে বেলায়েত হোসেনের সাথে ১৫/১৬ জন অজ্ঞাতনামা ডিবি নামধারী পুলিশ পরিচয়ে বাদীর বাড়ি প্রবেশ করেন। তারা ২৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। অস্ত্র মামলায় ফাঁসানো এবং বাদীর নারায়ণগঞ্জের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভ্রাম্যমাণ আদালত দিয়ে জরিমানাসহ জেলের হুমকি দেন তারা।
টাকা দিতে না পারায় আদরকে মারপিট করে ডিবির মিন্টু রোডে নিয়ে যায়। আদরের বাবা, মা এবং স্ত্রী ডিবি কার্যালয়ে যান। তখন আসামি বেলায়েত হোসেন বলেন, ২৫ লাখ টাকা না দিলে আদরকে ক্রসফায়ার দেয়া হবে অথবা ৮০০ বোতল ফেনসিডিল ও অস্ত্র দিয়ে মামলা দেয়া হবে। তখন আদরের বাবা সাড়ে তিন লাখ টাকা আসামিকে দেন। ১০ আগস্ট আরও ৫০ হাজার টাকা আসামিকে দেয়া হয়। আসামি আরও ছয় লাখ টাকা সাত দিনের মধ্যে দিতে বলেন, অন্যথায় বাদীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা দেয়ার হুমকি দেন।