নিজস্ব প্রতিবেদক:
অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানের হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে টেকনাফের তিন বাসিন্দাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব, যাদেরকে এই ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় সাক্ষী করা হয়েছিল।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. নুরুল আমিন, মো. নেজামুদ্দিন ও মোহাম্মদ আয়াজ। তারা তিনজনই টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের মারিশবুনিয়া এলাকার বাসিন্দা বলে র্যাব কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) দুপুরে র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘তারা এই ঘটনার মামলায় পুলিশের করা সাক্ষী ছিলেন। হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।’
সোমবার (১০ আগস্ট) রাতে টেকনাফের মারিশবুনিয়া থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়ানের অধিনায়ক উইং কমান্ডার আজিম আহমেদ জানান।
মঙ্গলবার বিকাল সোয়া ৪টার দিকে র্যাব ওই তিনজনকে কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম (টেকনাফ-৩) মো. হেলাল উদ্দিনের আদালতে হাজির করে সিনহা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখায় বলে কক্সবাজার আদালত পুলিশের পরিদর্শক প্রদীপ কুমার দাশ জানান।
তিনি বলেন, মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রত্যেকের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। বিচারক বুধবার (১২ আগস্ট) রিমান্ড আবেদনের শুনানির দিন রেখেছেন।
দুই বছর আগে সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যাওয়া সিনহা রাশেদ ‘লেটস গো’ নামে একটি ভ্রমণ বিষয়ক ডকুমেন্টারি বানাতে গত প্রায় একমাস ধরে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকায় ছিলেন। ওই কাজে তার সঙ্গে ছিলেন ঢাকার স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের তিন শিক্ষার্থী শাহেদুল ইসলাম সিফাত, শিপ্রা দেবনাথ ও তাহসিন রিফাত নূর। নূরকে ছেড়ে দিলেও পুলিশ সিফাতের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় মাদকদ্রব্য ও হত্যা মামলা এবং রামু থানায় শিপ্রার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে মামলা করে।
গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের বাহারছড়া চেকপোস্টে তল্লাশির সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন সিনহা রাশেদ। ওই সময় তার গাড়িতে সিফাত ছিলেন।
সিনহা নিহতের ঘটনায় এবং গাড়ি থেকে মাদক জব্দের অভিযোগে টেকনাফ থানায় দুটি মামলা করে পুলিশ, যাতে সিনহা এবং তার সঙ্গে থাকা সিফাতকে আসামি করা হয়।
আর তারা যেখানে থেকে কাজ করছিলেন, সেই নীলিমা রিসোর্ট থেকে শিপ্রাকে গ্রেপ্তার করার সময় মাদক পাওয়া যায় অভিযোগ করে তার বিরুদ্ধে রামু থানায় আরেকটি মামলা করা হয়।
পুলিশের করা এই তিন মামলার পর গত ৫ আগস্ট সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস কক্সবাজার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকতসহ নয়জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এই মামলায় আত্মসমর্পণ করে এখন কারাগারে আছেন ওসি প্রদীপ ও পরিদর্শক লিয়াকতসহ সাত পুলিশ সদস্য।
আদালতের নির্দেশে চারটি মামলারই এখন তদন্ত করছে র্যাব। এরই মধ্যে পুলিশের তিন মামলায় গ্রেপ্তার সিফাত ও শিপ্রাকে জামিন দিয়েছেন আদালত।
সান নিউজ/ আরএইচ/ এআর