নিজস্ব প্রতিবেদক:
রংপুর: স্কুলছাত্রী পূর্ণিমা রানী রায় সুন্দরী আত্মহত্যা করেননি, তাকে হত্যা করে ওড়না দিয়ে ঘরের তীরের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে মামলার প্রধান আসামি সুরজিত ও তার সহযোগী শ্যামলকে গ্রেপ্তারের পর চাঞ্চল্যকর ওই ‘আত্মহত্যার’ রহস্য উদঘাটন করেছে মেট্রোপলিটন হাজিরহাট থানা পুলিশ। হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন গ্রেপ্তারকৃত সুরজিত।
রোববার (৯ আগস্ট) দুপুরে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ) কাজী মুত্তাকিন ইবনু মিনান তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানান, নগরীর মনোহর বাবুপাড়া গ্রামের ফটিক চন্দ্র রায়ের মেয়ে মনোহর উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী পূর্ণিমা রানী রায় সুন্দরীর সঙ্গে প্রেম ও শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন একই এলাকার সুরজিত চন্দ্র রায়। একপর্যায়ে পূর্ণিমা অন্তসত্ত্বা হয়ে পড়েন।
পূর্ণিমার বাবা-মা ঢাকায় থাকায় গত ২৫ জুলাই সকালে সুরজিত তার বাড়িতে এসে ফের শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন। পূর্ণিমা সুরজিতকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে দুজনের মাঝে ঝগড়া বাধে। এক পর্যায়ে সুরজিত তাকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে ওড়না দিয়ে ঘরের তীরের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে সেখান থেকে পালিয়ে যান। পালিয়ে যাওয়ার সময় তিনি তার মোবাইলটি পূর্ণিমার ঘরে রেখে যান। পরে সেখান থেকে কৌশলে মোবাইলটি নিয়ে তার আত্মীয় শ্যামলের কাছে রেখে যান।
পূর্ণিমার স্বজনেরা তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহালের সময় তাকে ধর্ষণ ও অন্তসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি জানতে পারে।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা ফটিক চন্দ্র রায় সুরজিতকে আসামি করে রংপুর মেট্রোপলিটন হাজীরহাট থানায় মামলা করেন।
পুলিশি অভিযানের এক পর্যায়ে সুরজিত আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে দুইদিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক শাহ আলম। শনিবার (৮ আগস্ট) সুরজিত আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
জবানবন্দিতে তিনি জানান, গত সাতমাস ধরে পূর্ণিমার সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক। শারীরিক মেলামেশায় পূর্ণিমা অন্তসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিয়ের জন্য চাপ দেন। এ কারণে সুরজিত তাকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন বলেও জানান তদন্তকারী কর্মকর্তা।
সংবাদ সম্মেলনে আরো ছিলেন উপ-কমিশনার (অপরাধ) মো. শহিদুল্লাহ কাওছারসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সান নিউজ/ এআর