নিজস্ব প্রতিবেদক:
বরিশাল: ইয়াবা ও ফেনসিডিল দিয়ে অন্যকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেরাই ফেঁসে গেলেন দুই বোন। বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার অভিযানে ওই দুই কিশোরী গ্রেপ্তার হয়েছেন। এ সময়ে তাদের কাছ থেকে এক বোতল ফেনসিডিল এবং ৬ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় আটক দুই বোন এবং মাদক সরবরাহকারী বান্ধবীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরুল ইসলাম।
ঘটনা স্বীকার করেছেন গ্রেপ্তারকৃত দুই বোন মিতু বেগম (১৮) ও সেতু বেগম (১৬)। সঙ্গে দেড় বছর বয়সী মিতুর ছেলে সন্তান রয়েছে।
মিতু ও সেতু জানিয়েছেন, বরিশাল সিটি করপোরেশনের আলেকান্দা ১৪নং ওয়ার্ডের কালুশাহ সড়ক মীরা বাড়ির পোল এলাকার মৃত শাহ আলম মহুরির দুই ছেলে সবুজ গাজী ও নবীন গাজীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক বিরোধ চলে আসছিল। সেই সূত্রে বড় ভাই সবুজ গাজী ছোট ভাই নবীন গাজীর স্ত্রী মিতু বেগমকে (১৮) উত্ত্যক্ত করতেন। কথা না শুনলে গালিগালাজ করতেন। বিষয়টি থেকে পরিত্রাণ পেতে ছোট বোন সেতুর সঙ্গে আলাপ করেন মিতু। তারা দুজনে বুদ্ধি করেন যে, গালিগালাজের প্রতিশোধ নিতে ইয়াবা ও ফেনসিডিল দিয়ে ফাঁসিয়ে দেবেন সবুজ গাজীকে। সে অনুসারে সেতু তার বান্ধবীর কাছ থেকে এক বোতল ফেনসিডিল ও ছয় পিস ইয়াবা সংগ্রহ করে শনিবার (০৮ আগস্ট) বিকেলে সবুজ গাজীর বাসার পাশে পরিত্যক্ত আলনার নিচে ফেলে রাখেন।
থানার এসআই ফিরোজ আল মামুন বলেন, ‘মোবাইলে তথ্য পেয়ে আমরা অভিযান পরিচালনা করি। ঘটনাস্থলে গিয়ে তল্লাশি চালালে আমরা মাদক খুঁজে পাইনি। তখন গ্রেপ্তারকৃত দুজন দেখিয়ে দেন, মাদক কোন স্থানে রাখা আছে। বিষয়টি সন্দেহ হলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করি। এক সময় তারা স্বীকার করেন, মিতুর ভাসুরকে ফাঁসাতে এই কাজ করেছেন তারা।’
ওসি নুরুল ইসলাম বলেন, ‘শনিবার বিকেলে মােবাইলে একটি কল পেয়ে ফোর্স পাঠাই। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, যার ঘরের পাশে রাখা তিনি মাদকের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। মূলত প্রতিশোধ নিতে দুই কিশোরী মাদক দিয়ে ফাঁসাতে চেয়েছেন। ওই দুই কিশোরীর কাছে যিনি মাদক এনে দিয়েছেন, তার বিরুদ্ধেও মামলা করা হবে।’
গ্রেপ্তারকৃত কিশোরী সেতু আক্তার বলেন, ‘সবুজ আমাকেও খারাপ প্রস্তাব দিতেন, গালিগালাজ করতেন। আমার বোনকে মারধর করতেন। সেই নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে বুদ্ধি করে এই কাজ করেছি। আসলে আমি চেয়েছি, সবুজকে যেন পুলিশ নিয়ে মারে। তিনি যেন আমার বোনকে নির্যাতন করতে না পারেন।’
সান নিউজ/ এআর