জেলা প্রতিনিধি, পাবনা: পাবনার আমিনপুরে প্রেমের প্রস্তাবে ব্যর্থ হয় এক স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় ৪ তরুণকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই অভিযোগে শিশু বয়সী একজনকে ৫ বছরের আটকাদেশ দিয়েছেন আদালত। সাজাপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাসের আটকের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আনিত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় শিশু বয়সী আরো তিন জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
আরও পড়ুন : স্কুল বন্ধ রেখে মন্ত্রীর ছেলের বৌভাতে শিক্ষকরা
রবিবার (৮ জানুয়ারি) বিকেলে পাবনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান এই আদেশ দেন।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- আমিনপুরের ভবানীপুর গ্রামের মৃত মুজিবরের ছেলে মো. সজিব (২০), শ্রী সম্মু কর্মকারের শ্রী সুমন কর্মকার (২২), কুদ্দুস মন্ডলের মো. ইমন মন্ডল (২৪), খন্দকার মঞ্জুর মোরশেদের খন্দকার জোছেফ (২৪) এবং কদিমালঞ্চি মো. হোসেন আলীর ছেলে মো. নাহিদ হাসান (১৫)। রায়ের সময় তারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
ভুক্তভোগী ধর্ষিতা রাজধানীর মিরপুরের একটি স্কুল থেকে ঘটনার বছরে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন এবং জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন।
এজাহারে সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষার পর করোনাকালে গ্রামের বাড়িতে আসেন ভুক্তভোগী রুকশানা (ছদ্মনাম)। আসার পর থেকেই বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত ও প্রেমের প্রস্তাব দিত একই এলাকার নাহিদ। প্রেমের প্রস্তাবে ব্যর্থ হওয়ায় একই বছরের ৭ জুন রাতে জোরপূর্বক শয়ন কক্ষে প্রবেশ করে আসামিরা। এসময় আসামিরা রুকশানার হাত-মুখ চেপে ধরে পালাক্রমে ধর্ষণ করে পালিয়ে যান।
আরও পড়ুন : শীতার্তদের পাশে এন.এস.ইউ সোশ্যাল সার্ভিসেস ক্লাব
রুকশানার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসা প্রদান করেন। এঘটনায় ধর্ষিতার মা বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। একই বছরের ১০ নভেম্বর চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। ১২ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে আজকে রায় ঘোষণা করেন আদালত।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট খন্দকার আবদুর রকিব। আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. শাহজাহান আলী মন্ডল। রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও অসন্তোষ প্রকাশ করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী।
আরও পড়ুন : জামিন পেলেন সেলিম খান
মো. শাহজাহান আলী মন্ডল বলেন, রায়ে আমার মক্কেলরা ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। রায়ে আমরা অসন্তুষ্ট। এ জন্য আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে। আশা করি সেখানে আমার মক্কেলরা ন্যায় বিচার পাবেন এবং নির্দোষ প্রমাণিত হবেন।
সান নিউজ/এসআই