নিজস্ব প্রতিবেদক:
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ হত্যার ঘটনার বিষয়ে অবহিত হতে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুকও কক্সবাজার পৌঁছেছেন। তিনি চট্টগ্রাম থেকে রোববার (২ আগস্ট) সন্ধ্যায় কক্সবাজার পৌঁছেন। এর আগে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) মো. জাকির হোসেন এ বিষয়টি নিয়ে কক্সবাজার আসেন।
গত শুক্রবার (৩১ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া শামলাপুর পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে দায়িত্বরত পুলিশ পরিদর্শক (আইসি) লিয়াকত আলীর গুলিতে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা নিহতের ঘটনা ঘটে। ইতোমধ্যে পুলিশ কেন্দ্রটির সব সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। রোববার (২ আগস্ট) তাদেরকে ক্লোজড করে কক্সবাজার পুলিশলাইনে নিয়ে আসা হয়। তদন্তকেন্দ্রটিতে নতুন পুলিশ সদস্য নিয়োগ দিয়েছে কক্সবাজার জেলা পুলিশ।
জানা গেছে, কক্সবাজারমুখী সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদের প্রাইভেটকারটি বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে পৌঁছালে গাড়িটি তল্লাশি করে প্রথমে যেতে বলা হলেও পরে আবার থামানো হয়। আইসি লিয়াকত আলী মেজর সিনহাকে গাড়ি থেকে বের হতে বলেন। এ সময় মেজর সিনহা ওপর দিকে তার হাত তুলে বের হয়ে আসেন। এ অবস্থায় তাকে তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলী পর পর তিনটি গুলি করে হত্যা করেন বলে প্রত্যক্ষদর্শী ও সেনা সদর থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়। তবে কক্সবাজার পুলিশের দাবি, গাড়ি থেকে নামার সময় মেজর সিনহা পিস্তল তাক করায় আত্মরক্ষার্থে তাকে গুলি করা হয়।
খুন হওয়া অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ যশোরের বীর হেমায়েত সড়কের সরকারের সাবেক উপ-সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা এরশাদ খানের ছেলে। তিনি.৫১তম বিএমএ লং কোর্সের একজন কর্মকর্তা হিসাবে সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় নিয়োজিত বাংলাদেশের এলিট ফোর্স এসএসএফে (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) বাছাইকৃত চৌকস সেনা অফিসার হিসাবেও কর্মরত ছিলেন। ২০১৮ সালে মেজর পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় সিনহা মো. রাশেদ সেনাবাহিনী থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নেন।
‘জাস্ট গো’ নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলের জন্য প্রামাণ্যতথ্য চিত্র নির্মাণের জন্য গত ৩ জুলাই থেকে তিনিসহ আরো ৪ জন কক্সবাজারে অবস্থান করছিলেন। গত ৫ জুলাই তারা কক্সবাজার পৌরসভার মাধ্যমে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ থেকে করোনার নমুনা টেস্ট করান। টেস্টে তাদের রিপোর্ট 'নেগেটিভ' আসে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত তিন সদস্যের কমিটি এ ঘটনা তদন্তে কাজ শুরু করেছে। কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাজাহান আলিকে প্রধান করে গঠিত কমিটির অন্য দুজন হলেন, কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং রামু সেনানিবাসের ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও কক্সবাজারের এরিয়া কমান্ডারের একজন প্রতিনিধি। তদন্ত কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে বিস্তারিত তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
সান নিউজ/ এআর