নিজস্ব প্রতিনিধি:
ফরিদপুর: ফরিদপুরের বহুল আলোচিত দুই ভাই রুবেল-বরকতের দুই হাজার কোটি টাকা মানিলন্ডারিং মামলায় শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার লেভীর পরে একই দিনে গ্রেপ্তার হলেন শ্রমিক লীগ নেতা বিল্লাল হোসেন (৫৪)।
শুক্রবার (৩১ জুলাই) বিকেল তিনটার দিকে শহরতলীর হাড়োকান্দি এলাকার বাড়ি থেকে বিল্লালকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এর আগে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে নাজমুল ইসলাম লেভীকে শহরের চরকমলাপুরের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) এই মানিলন্ডারিং মামলার প্রধান আসামি শহর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ফরিদপুর প্রেসক্লাবের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান রুবেল গত ৭ জুন গ্রেপ্তার হয়ে এখন কেরাণীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে লেভী ও বিল্লালের সম্পৃক্ততা আসায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান।
ফরিদপুর ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুনীল কর্মকার বলেন, ঢাকার কাফরুল থানার মানিলন্ডারিং মামলায় সিআইডি পুলিশের চাহিদা অনুসারে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বিল্লালকে।
বিল্লাল হাড়োকান্দির মৃত শেখ ইছামুদ্দিনের ছেলে। তিনি জেলা শ্রমিক লীগের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম বলেন, ডিবি পুলিশ শুক্রবার বিকেলে বিল্লালকে থানায় সোপর্দ করেছে। আগামীকাল শনিবার (১ আগস্ট) তাকে জেলার মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে হাজির করা হবে।
বরকত ও তার ভাই রুবেলের বিরুদ্ধে দুই হাজার কোটি টাকার সম্পদ অবৈধ উপায়ে উপার্জন ও পাচারের অভিযোগে গত ২৬ জুন মামলাটি করেন সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ মামলাটি করেন। ২০১২ সালের মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন সংশোধনী ২০১৫ এর ৪(২) ধারায় মামলাটি হয়।
এ মামলায় দুই ভাইয়ের দশদিনের রিমান্ড চায় সিআইডি। গত ১৩ জুলাই ভার্চুয়াল কোটের মাধ্যমে এ রিমান্ডের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ওই সময় ফরিদপুর কারাগারে থাকা অবস্থায় জেল গেটে জুম অ্যাপসের মাধ্যমে শুনানিতে অংশ নেন বরকত ও রুবেল। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলামের আদালত দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ১৯ জুলাই ভোরে সিআইডি দুই ভাইকে ফরিদপুর কারাগার থেকে ঢাকার মালিবাগ কার্যালয়ে নেয়। দুইদিনের রিমান্ড শেষে সিআইডি গত ২১ জুলাই ফের দশদিন করে রিমান্ড চাইলে আদালত তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। দুই দফায় পাঁচদিনের রিমান্ড শেষে গত ২৪ জুলাই রুবেল ও ররকত মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। ওই রাতে জবানবন্দি গ্রহণের পর আদালতের নির্দেশে দুই ভাইকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
গত ১৬ মে রাতে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহার শহরের গোয়ালচামট মোল্লা বাড়ি সড়কের বাড়িতে দুই দফা হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গত ১৮ মে সুবল সাহা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। ওই হামলার মামলার আসামি হিসেবে গত ৭ জুন রাতে শহরের বদরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ বরকত, রুবেলসহ মোট নয়জনকে গ্রেপ্তার করে।
সান নিউজ/ এআর