সান নিউজ ডেস্ক : ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, আদালত চত্বর থেকে দুই জঙ্গি সদস্যকে ছিনতাইয়ের ঘটনায় নেতৃত্ব দেওয়া ব্যক্তির নাম আমরা জেনেছি।
আরও পড়ুন : আমরা কলোনিয়াল দেশ না
তিনি আরও বলেন, তাকে শনাক্ত করা হয়েছে। তার সহযোগী বেশ কয়েকজনকেও শনাক্ত করা হয়েছে। পরিকল্পনা কীভাবে হয়েছে তাও আমরা গোয়েন্দা কার্যক্রমের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। আপাতত তদন্তের স্বার্থে আমরা তাদের নাম প্রকাশ করছি না।
সোমবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন মো. আসাদুজ্জামান।
সিটিটিসি ইউনিট প্রধান বলেন, বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিষয়টি অনেক জটিল। নাইন ইলেভেনের ঘটনা কবে ঘটেছিল সেটা আমরা সবাই জানি (২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর)। ওই ঘটনার এক যুগ পর কিন্তু ওসামা বিন লাদেনের অপারেশনটি সংঘঠিত হয়েছিল।
আরও পড়ুন : যুদ্ধ-স্যাংশনে উন্নয়নের গতি কিছুটা শ্লথ
আদালতের সামনে থেকে জঙ্গি ছিনতাই অপারেশনে কারা কারা ছিল তাদের বেশ কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। নেতৃত্ব দেওয়া ব্যক্তিকেও শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের সবাইকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার কাজ চলছে। এজন্য গণমাধ্যম ও দেশবাসীর সহযোগিতা চাইছি।
তাদের আরও বড় কোনো পরিকল্পনা ছিল কি না জানতে চাইলে মো. আসাদুজ্জামান বলেন, তা বলা সম্ভব তাদের গ্রেপ্তার করা গেলে। তবে মনে হচ্ছে বড় পরিকল্পনা ছিল। তারা চারজনকে ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু দুজনকে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে।
যেসব আসামিকে আদালতে হাজিরার জন্য আনা হয়েছিল তারা সবাই আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখা অর্থাৎ আস্কারি বিভাগের সদস্য ছিল। তাদের সবাইকে সিটিটিসি ২০১৬ সালে গ্রেপ্তার করেছিল। তাদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে অনেকগুলো ঘটনা ও হত্যার রহস্য উদঘাটিত হয়েছিল।
আরও পড়ুন : পঞ্চগড়ে কৃষকের নতুন স্বপ্ন
মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা প্রত্যেকটি পয়েন্টকে সতর্ক করে দিয়েছি। জঙ্গিরা যাতে সীমান্ত পাড়ি দিতে না পারে, তারা যাতে কোনোভাবে বের হতে না পারে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারা যাতে কোনোভাবে আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ফাঁকগলে বের হয়ে যেতে না পারে। পুলিশ প্রধান একটি ঘোষণা দিয়েছেন ছিনতাই হওয়া দুই জঙ্গিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ১০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।
মেজর জিয়া নেতৃত্ব দেননি, তিনি মাস্টারমাইন্ড। তবে যিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন তাকে আমরা শনাক্ত করেছি। নামটা আপাতত বলতে চাচ্ছি না।
জঙ্গি ছিনতাইয়ের মাধ্যমে জঙ্গিরা নতুন করে সংগঠিত হচ্ছে কি না? এই অপারেশনে নতুন জঙ্গি সংগঠনের কোনো যোগসাজশ রয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, গতকালের জঙ্গি ছিনতাই অপারেশনে নতুন জঙ্গি সংগঠনের কোনো হাত নেই।
আরও পড়ুন : বাধ্যতামূলক অবসরে এসপি জিল্লুর
তবে নতুন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে আনসার আল ইসলাম, জেএমবি, নিউ জেএমবি, হরকাতুল জিহাদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের লোক নিয়ে নতুন জঙ্গি সংগঠনের যোগসাজশ আমরা পেয়েছি। তবে এই ঘটনায় তাদের হাত নেই। গতকালের অপারেশনে জড়িত কমপক্ষে ১০/১২ জন আনসার আল ইসলামের সদস্য।
প্রসঙ্গত, রোববার (২০ নভেম্বর) দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটের দিকে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রধান ফটকের সামনে থেকে মোটরসাইকেলে করে আসা চার জঙ্গি পুলিশের চোখে-মুখে পিপার স্প্রে করে লেখক অভিজিৎ রায় ও জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে ছিনিয়ে নেয়।
আরও পড়ুন : এখনই বিদ্যুতের দাম বাড়ছে না
ছিনিয়ে নেওয়া আসামিরা হলেন, সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার মাধবপুরের মইনুল হাসান শামীম এবং লালমনিরহাটের আদিতমারি উপজেলার ভেটেশ্বর গ্রামের আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব। তারা জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য।
এরপর তাদের গ্রেফতার করতে ঢাকা জুড়ে অভিযান শুরু করে পুলিশ। পালিয়ে যাওয়া দুই জঙ্গিকে ধরিয়ে দিলে প্রত্যেকের জন্য ১০ লাখ করে ২০ লাখ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করেছে পুলিশ।
সান নিউজ/এইচএন