নিজস্ব প্রতিবেদক:
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে নকল মাস্ক সরবরাহের মামলায় গ্রেপ্তার ছাত্রলীগের সাবেক নেত্রী শারমিন জাহানকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে আদালত।
শারমিনের করা জামিন আবেদন নাকচ করে দিয়ে ঢাকার মহানগর হাকিম মইনুল ইসলাম শনিবার (২৫ জুলাই) এই আদেশ দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন-১ শাখায় সহকারী রেজিস্ট্রার শারমিনের মালিকানাধীন অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল নিম্নমানের মাস্ক সরবরাহ করেছে অভিযোগ করে শাহবাগ থানায় মামলা করেন বিএসএমএমইউর প্রক্টর অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ।
নকল এন-৯৫ মাস্ক সরবরাহের অভিযোগে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কর্তৃপক্ষের করা মামলায় অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের মালিক ও ছাত্রলীগের সাবেক নেত্রী শারমিন জাহানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
শুক্রবার (২৪ জুলাই) রাতে ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশের রমনা বিভাগের একটি টিম তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ডিবি কার্যালয়ে।
ওই মামলায় শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার শাহবাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় শারমিন জাহানকে। পরে রাতে তাকে শাহবাগ থানা থেকে মামলা তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
শনিবার দুপুরে শারমিনকে ঢাকার হাকিম আদালতে হাজির করে তিন দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন পুলিশ পরিদর্শক মো. আক্তারুজ্জামান ইলিয়াস। অন্যদিকে শারমিনের পক্ষে তার আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন।
শুনানি শেষে বিচারক জামিন নাকচ করে তিন দিনের রিমান্ডই মঞ্জুর করেন বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হেমায়েত উদ্দিন খান হিরণ জানান।
এর আগে নকল এন৯৫ মাস্ক সরবরাহের ঘটনায় ‘অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল’কে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেয় বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয় তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষের কারণ দর্শানোর নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার (২২ জুলাই) তার উত্তর দেন অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার শারমিন জাহান।
বিষয়টিকে অনাকাঙ্ক্ষিত উলেখ করে বলা হয়, নকল মাস্ক সরবরাহ করার কোনো ইচ্ছা তাদের ছিল না। তাদের কাছে যেভাবে প্যাকেটজাত অবস্থায় মাস্কগুলো এসেছে সেভাবেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। তবে অভিযোগ পাওয়ার পরপরই তারা সেসব মাস্ক প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, 'কারণ দর্শানো নোটিশে তারা যা বলছেন তা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। বিষয়টি তদন্তের জন্য প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে তিন সদস্যবিশিষ্ট যে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।'
উল্লেখ্য, শারমিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। এরপর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসম্পাদক পদে ছিলেন। আওয়ামী লীগের গত কমিটিতে মহিলা ও শিশুবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য ছিলেন। এর আগের কমিটিতে একই উপকমিটির সহসম্পাদক ছিলেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে স্নাতকোত্তর শেষে বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রশাসন-১ শাখায় সহকারী রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত তিনি।