নিজস্ব প্রতিনিধি:
গাজীপুরের কালিয়াকৈর থেকে পঞ্চগড়ে মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করতে এসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক মডেল। এ ঘটনায় প্রথম বাংলা টিভি নামে একটি প্রতিষ্ঠানের চিফ নিউজ এটিডর ও গ্রাফিক ডিজাইনার সাজ্জাদ হোসেন মিলন (৩৩) এবং ধর্ষণে সহযোগিতার অপরাধে বোদা উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক আবিদা সুলতানা লাকীকে (৪৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ওই নারীকে আদালতে হাজির করে জবানবন্দি গ্রহণসহ তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।
বোদা থানায় ওই নারী গ্রেফতার দুজনসহ তিন জনের নামে ও অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। গ্রেফতারদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ওই নারী পেশাগত কারণে গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকায় বসবাস করেন। ইউটিউবের জন্য বিভিন্ন মিউজিক ভিডিওতে কাজ করার সময় পাঁচ বছর আগে পরিচয় হয় পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার বোদা পৌরসভার ঝিনুকনগর এলাকার ধোপা রফিকুল ইসলামের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন মিলনের সঙ্গে।
মিলন ঢাকায় প্রথম বাংলা টিভি নামে একটি প্রতিষ্ঠানের চিফ নিউজ এডিটর ও গ্রাফিক ডিজাইনার হিসেবে কাজ করে। এই সম্পর্কের সূত্র ধরেই সাজ্জাদ নিজ এলাকা পঞ্চগড়ের বোদায় একটি মিউজিক ভিডিও তৈরির কথা বলে মডেল হিসেবে কাজ করার জন্য ওই তরুণীকে আসতে বলে।
সাজ্জাদের কথামতো গত ১৪ জুলাই সকালে পঞ্চগড়ের বোদায় পৌঁছান ওই তরুণী। সাজ্জাদ তাকে প্রথমে নিয়ে যায় বোদা উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক আবিদা সুলতানা লাকীর থানাপাড়াস্থ বাড়িতে। সেখানেই সাজ্জাদসহ ৪/৫ জন মিলে তাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। সেখান থেকে তাকে বোদা পৌরসভার ভাসাইনগরের আরেক বাড়িতে নিয়ে যায় সাজ্জাদ। সেখানেও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন ওই নারী।
এজাহারে বলা হয়েছে, গত ১৫ জুলাই সন্ধ্যায় ওই তরুণী কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে বোদা থানায় আশ্রয় নেন। খবর পেয়ে পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী বোদা থানায় গিয়ে ওই তরুণীর কাছে বিস্তারিত অবগত হন। এরপর রাতেই ওই মডেল ৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১০/১২ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে বোদা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলায় নাম উল্লেখ করা অপর আসামি হচ্ছে বোদা উপজেলার নগরকুমারী গ্রামের জসীম উদ্দিন (২২)। পুলিশ রাতেই সাজ্জাদ হোসেন মিলন ও আবিদা সুলতানা লাকীকে গ্রেফতার করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বোদা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু সায়েম মিয়া জানান, প্রধান দুই আসামিকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। আদালতে তাদের ৫ দিন করে রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। এছাড়া ধর্ষণের শিকার ওই তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা ও জবানবন্দি সম্পন্ন হয়েছে।
পঞ্চগড় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী জানান, মডেলকে ধর্ষণের ঘটনায় অনেক বিষয় বেরিয়ে আসছে। আমরা ধারণা করছি, এই ঘটনার সঙ্গে পুরো একটি চক্র কাজ করেছে। আদালত আসামিদের রিমান্ড মঞ্জুর করলে আরও অনেক তথ্য আমরা বের করতে পারবো। আমরা পুরো চক্রটিকেই বের করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এছাড়া বাকি আসামিদেরও গ্রেফতারের জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।