নিজস্ব প্রতিনিধি:
দিনের পর দিন কোয়ারিন্টাইনে থাকতে থাকতে যদি বিরক্ত হয়ে যান, কিংবা করোনা উপসর্গ আছে বলে যদি হাসপাতালে অন্যান্য রোগের জন্য ভর্তি না হতে পারেন তাহলে এর সমাধান মিলবে মাত্র ৫ হাজার টাকায়। এই টোটকা কাজে লাগিয়েই বেশ কয়েক দিন ধরে মাত্র ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে ‘করোনা নেগেটিভ’ সনদ বিক্রি করে আসছিল একটি চক্র। বিষয়টি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরে আসলে তারা দ্রুত পদক্ষেপ নেন।
ফলাফল, বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে ভুয়া ‘করোনা নেগেটিভ-পজিটিভ’ সনদ বিক্রির দায়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। সোমবার (১৫ জুন) উত্তর মুগদা এলাকা থেকে র্যাব-৩-এর একটি দল অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন ফজল হক, মো. শরিফ হোসেন, মো. জামশেদ ও মো লিয়াকত আলী।
র্যাব-৩-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফাইজুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা দেড় শ-জনের জন্য সনদ তৈরি করেছিলেন। তারা এক-একটি সনদ পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকায় বিক্রি করছিলেন।
চক্রটি মুগদা হাসপাতাল থেকে দেওয়া করোনা রোগীর পজিটিভ ও নেগেটিভ রিপোর্টের কপি সংগ্রহ করে তা স্ক্যান করে সেখানে নাম বসিয়ে বিক্রি করছে। মূলত, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা এই সনদ সংগ্রহ করছিলেন।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে র্যাব জানতে পেরেছে, করোনায় আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও চাকরি চলে যাবে, এই আশঙ্কা থেকে অনেকে নেগেটিভ রিপোর্ট সংগ্রহ করছেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে রিপোর্ট পেতে দীর্ঘসূত্রতার কারণে অন্য পথে রিপোর্ট সংগ্রহ করেছেন কেউ কেউ। বিদেশে যাওয়ার জন্যও অনেকে এই চক্রটির কাছ থেকে নেগেটিভ রিপোর্ট সংগ্রহ করেছেন। কেউ কেউ পজিটিভ রিপোর্টও নিয়েছেন। এতে ছুটির সুযোগ পেয়েছেন কেউ কেউ, আবার কেউ কেউ ক্ষতিপূরণের আশায়ও নিয়েছেন।
তবে ঠিক কে কে এই রিপোর্ট সংগ্রহ করেছেন, সে সম্পর্কে র্যাব নিশ্চিত হতে পারেনি। র্যাব বলছে, বাংলাদেশে করোনা পজিটিভ বা নেগেটিভ কি না, সেই প্রতিবেদনে শুধু নাম ও বয়সের উল্লেখ থাকছে। সেখানে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর বা পাসপোর্ট নম্বর থাকে না। ফলে ভুয়া সনদের ক্রেতা কারা, তা জানা যাচ্ছে না।
র্যাবের আশঙ্কা, যেসব চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠানে করোনাভাইরাস পরীক্ষা হচ্ছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের আশপাশে এ ধরনের চক্র সক্রিয় আছে।