নিজস্ব প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের চাঞ্চল্যকর সেনাসদস্য মো. সাইফুল ইসলাম সাইফ হত্যা মামলায় আটজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেন। বিচারক মো. নজরুল ইসলাম হাওলাদার এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার সময় মোট আট আসামির মধ্যে আদালতে উপস্থিত ছিল পাঁচ জন। অন্য তিনজন আসামি পলাতক রয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো— সদর উপজেলার বংকিরা গ্রামের (১নং) আসামি আকিমুল ইসলাম, একই উপজেলার বোড়াই গ্রামের মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে মো. মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, চুয়াডাঙ্গা জেলার ভুলতিয়া গ্রামের মৃত সবেদ আলী মোল্লার ছেলে ডালিম মোল্লা, সদর উপজেলার আসাননগর গ্রামের নবী মোল্লার ছেলে মো. আব্বাস আলী, একই গ্রামের মৃত রমজান মণ্ডলের ছেলে মো. আবুল কাশেম, মৃত সাহেব আলীর ছেলে মো. ফারুক হোসেন, বংকিরা গ্রামের মো. ইয়াকুব্বর মণ্ডলের ছেলে মো. মতিয়ার রহমান ওরফে ফনে এবং সদর উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের দাউদ মণ্ডলের ছেলে মো. মুক্তার হোসেন ওরফে মুক্তার।
পলাতক তিনজন হলো— মো. মতিয়ার রহমান ওরফে ফনে, মো. মুক্তার হোসেন ওরফে মুক্তার এবং ডালিম মোল্লা। ডালিম উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে সৌদি আরব পালিয়েছেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবদুল আহদ।
আদালতসূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে ১৮ আগস্ট রাতে ঝিনাইদহের বংকিরা পশ্চিমপাড়া এলাকার হাফিজ উদ্দীনের দুই ছেলে সাইফুল ইসলাম সাইফ (সেনাসদস্য) ও মনিরুল ইসলাম (নৌ সদস্য) বড় ভাইয়ের শ্বশুর সামসুল মোল্লাকে আনতে বদরগঞ্জ বাজারে যান। রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাড়ি ফেরার সময় বেলতলারদাড়ি নামক স্থানে পৌঁছালে রাস্তার ওপর গাছ ফেলা দেখে বুঝতে পারেন সংঘবদ্ধ ডাকত দল গাছ ফেলেছে।
তারা তিনজন মোটরসাইকেল থেকে নেমে চিৎকার করলে ডাকাত দলের একজন সাইফকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। পরবর্তীতে ছোট ভাই মনির বংকিরা বাজার সংলগ্ন পুলিশ ও স্থানীয় জনতার সহায়তায় তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিলে সেখানকার চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা মো. হাফিজ উদ্দিন বিশ্বাস বাদী হয়ে ২০১৮ সালের ১৯ আগস্ট ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলাটির তদন্তে নেমে পুলিশ আটজন আসামির সম্পৃক্ততার খবর জানতে পারে। এদের অধিকাংশের বিরুদ্ধে থানায় ডাকাতিসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এ মামলায় মো. আকিমুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হলে জড়িতদের নাম প্রকাশ করে আদালতে জবানবন্দি প্রদান করে।
২০১৯ সালের ৩০ জুন ঝিনাইদহ সদর থানার তৎকালীন পরিদর্শক অপারেশন মো. মহসীন হোসেন আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেন। এ মামলায় ২০ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
সানসনিউজ/ এএএ