নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামের অভিযোগ, তারই অধীনস্ত যুগ্ম কমিশনার (লজিস্টিকস) মো. ইমাম হোসেন তাকে পার্সেন্টেজ (সুবিধা) গ্রহণের প্রস্তাব দিয়েছেন। ডিএমপি’র বিভিন্ন কেনাকাটায় যুক্ত আছেন যুগ্ম কমিশনার। তার কাছ থেকে পার্সেন্টেজ গ্রহণের প্রস্তাব পাওয়ার অভিযোগ করে তাকে জরুরি ভিত্তিতে অন্যত্র বদলি করতে পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) একটি চিঠির মাধ্যমে অনুরোধ জানিয়েছেন কমিশনার নিজেই।
গত ৩০ মে চিঠিটি পাঠানো হলেও পুলিশ সদর দফতরে তা এখনও পৌঁছায়নি বলে দাবি করেছেন সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) সোহেল রানা। শুক্রবার (৫ জুন) রাতে তিনি বলেন,‘প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের কিছু প্রশাসনিক বিষয় থাকে এবং এগুলোর ক্ষেত্রে যথাযথ প্রশাসনিক ও পেশাদারি ব্যবস্থা নেওয়া হয়। যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বা শোনা যাচ্ছে তেমন কিছু পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে এখনও পৌঁছায়নি। এমন কোনও চিঠি বা ইস্যু এলে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স যথাযথ পেশাদারি মনোভাবে দেখবে।’
চিঠিতে যুগ্ম কমিশনার ইমাম হোসেনকে দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘ডিএমপির বিভিন্ন কেনাকাটায় যুগ্ম কমিশনার (লজিস্টিকস) মো. ইমাম হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।’
কেনাকাটায় পার্সেন্টেজ গ্রহণের প্রস্তাব পাওয়ার অভিযোগ জানিয়ে চিঠিতে ডিএমপি কমিশনার লিখেছেন, ‘তদুপরি তিনি ডিএমপির কেনাকাটায় স্বয়ং পুলিশ কমিশনারের নিকট পার্সেন্টেজ গ্রহণের প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন। ফলে উক্ত কর্মকর্তাকে ডিএমপিতে কর্মরত রাখা সমীচীন নয় মর্মে প্রতীয়মান হয়েছে।’
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে যুগ্ম কমিশনার ইমাম হোসেনের সরকারি ফোন নম্বরে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও সাড়া দেননি। প্রতিবারই কল কেটে দিয়েছেন তিনি।
আইজিপি বরাবর চিঠির ব্যাপারে জানতে ফোন দেওয়া হলে ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামের সরকারি ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-কমিশনার মো. ওয়ালিদ হোসেন চিঠির বিষয়ে কিছু জানেন না বলে দাবি করেছেন। তার কথায়, ‘গোপনীয় কিছু থাকলে তা মিডিয়া বিভাগে আসে না। কমিশনার মহোদয় এমন কোনও চিঠি পাঠিয়েছেন কিনা তা আমার জানা নেই।’
সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালে ডিএমপি’র তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার হিসেবে যোগ দেন ইমাম হোসেন। পরবর্তী সময়ে ডিএমপির উপ-কমিশনার (অর্থ) ও উপ-কমিশনার (লজিস্টিকস) পদে দায়িত্ব পালন করেন। পদোন্নতি পেয়ে যুগ্ম কমিশনার হিসেবে লজিস্টিকস বিভাগে কর্মরত আছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, আছাদুজ্জামান মিয়া ডিএমপি কমিশনার হিসেবে অবসরে গেলে এই পদে আসেন ক্লিন ইমেজের কর্মকর্তা হিসেবে সুপরিচিত মোহা. শফিকুল ইসলাম। কমিশনারের চেয়ারে বসেই ডিএমপি কার্যালয়সহ প্রতিটি থানাকে একটি শৃঙ্খলার মধ্যে নেয়ার কাজে হাত দেন তিনি। দুর্নীতিবিরোধী জিরো টলারেন্সের শক্ত দেয়াল গড়ে তোলেন সর্বত্র।