নিজস্ব প্রতিনিধি, বোয়ালমারী (ফরিদপুর): ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে তিন সন্তানের এক জননীকে গলাকেটে হত্যার পর চব্বিশ ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী হত্যা সম্পর্কিত কোন ক্লু বের করতে পারেনি।
বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) দিনের যেকোনো সময় হত্যার পর নিলুফার ইয়াসমিন (৪০) নামের ওই গৃহবধূর গলাকাটা লাশ টয়লেটের ট্যাংকির মধ্যে ফেলে রাখে। ওই গৃহবধূর বাড়ি বোয়ালমারী পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের মাঝকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশনের পশ্চিমে আধারকোঠা গ্রামে।
তিনি উপজেলার চতুল ইউনিয়নের ধুলপুকুরিয়া গ্রামের আব্দুল ওহাব মোল্যার মেয়ে এবং সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্পোরাল আবুল খায়েরের স্ত্রী।
হত্যাকাণ্ডের পর বৃহস্পতিবার রাতে ও শুক্রবার সকালে সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালি সার্কেল) সুমন কর, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারিয়া হক, থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ নুরুল আলম, গোয়েন্দা সংস্থা পিবিআই, সিআইডি, ডিবি, র্যাবের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
নিহতের বোন স্কুল শিক্ষক কবিতা খানম (৩০) জানান, নিলুফার মেয়ে প্রিয়াঙ্কার (২২) বিয়ে হয়েছে পার্শ্ববর্তী আলফাডাঙ্গা উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের ফলিয়া গ্রামে। ইমরান (২০) ও অন্তর (১৮) নামে তার দুই ছেলে জাহাজে কাজ করেন। দুলা ভাই মারা যাওয়ার পর ওই বাড়িতে তিনি একাই থাকতেন। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে নিলুফা মাকে (জাহেদা বেগম) ফোনে জানিয়েছিল ব্যাংকে টাকা তুলতে যাবে।
তিনি আরো জানান, দুপুরের পর থেকে তার ফোন বন্ধ পাওয়ায় এবং কোনোভাবেই যোগাযোগ করতে না পারায় সন্ধ্যা ৭টার দিকে মা, খালা এবং আমি নিজে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখি প্রধান গেট তালাবদ্ধ।
এ সময় ওয়াল টপকে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে দেখি বিছানা ও ঘরের মেঝেতে রক্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে ঘর থেকে কিছু একটা টেনে নেয়ার ছাপ টয়লেটের ট্যাংকি পর্যন্ত দেখা যায়। টয়লেটের ট্যাংকির ঢাকনা খোলা হলে ময়লার মধ্যে আমার বোনের পা দেখতে পাই। পরে থানা পুলিশ ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় রাত ৮টায় লাশ উদ্ধার করে।
নিহতের মেয়ে প্রিয়াঙ্কা বলেন, গত বছর বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে মা একাই ওই বাড়িতে থাকতেন। ঘটনার দিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মার সাথে সর্বশেষ কথা হয়েছিল। সকাল ৯টার পর থেকে মা’র ফোন বন্ধ পাই।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ নুরুল আলম শুক্রবার (৮ অক্টোবর) বেলা ২টায় বলেন, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শুক্রবার সকালে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এখন পর্যন্ত থানায় নিহতের কেউ অভিযোগ দেয়নি। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের এখনো কোন ক্লু পাওয়া যায়নি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং হত্যাকান্ডের তদন্ত করছেন। প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।
সান নিউজ/এমকেএইচ