নিজস্ব প্রতিবেদক: চায়না থেকে নিয়ন্ত্রিত বেশ কিছু অ্যাপস দিয়ে দেশে চলছে সুদের রমরমা ব্যবসা। অ্যাপস ভিত্তিক এসব অবৈধ সুদের ব্যবসা পরিচালনাকারীসহ অনলাইনে প্রতারণা চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ডিবি শাখা। রাজধানীর ধানমন্ডি, বনানী ও মিরপুর এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে মিন্টু রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবি প্রধান একেএম হাফিজ আকতার এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তাররা হলেন-ইমানুয়্যাল এডওয়ার্ড গোমেজ, আরিফুজ্জামান, শাহিনুর রহমান ওরফে রাজীব, শুভ গোমেজ ও আকরাম। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি প্রাইভেটকার, ৯টি মোবাইল ফোন, ৪টি ল্যাপটপ ও তিন ব্যাংকের ৪টি চেক বই জব্দ করা হয়েছে।
ডিবি প্রধান একেএম হাফিজ আকতার জানান, জামানতবিহীন মাত্রাতিরিক্ত সুদের কারবার গড়ে তুলেছে অ্যাপস ভিত্তিক প্রতারক চক্র। তাদের প্রধান টার্গেট ছাত্র-ছাত্রী, ছোটখাটো ব্যবসায়ী ও বেকার যুবক।
ডিবি প্রধান জানান, সোশ্যাল মিডিয়ায় ওপেন বিজ্ঞাপন দিয়ে তারা এসব কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এসব দেখেই যুবকেরা ঝুঁকে পড়েছে এদিকে। এর মধ্যে অধিকাংশ ছাত্র। যারা করোনাকালীন সময়ে টিউশনি হারিয়ে সুদের ঋণে জড়িয়ে পড়ছেন। টা-কলা, ক্যাশম্যান, রেপিডক্যাশ, আমার ক্যাশ, ক্যাশক্যাশ ও ক্যাশক্যাশ (Takla, Chashman, Rapidkash, My Cash, Kashkash, Cashcash,) নামের ছয় ধরনের অ্যাপস প্রাথমিকভাবে পাওয়া গেছে। এসব অ্যাপসগুলোর চায়না থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এর মালিকও চায়নার। বাংলাদেশে প্রতিনিধির মাধ্যমে তাঁরা এসব প্রতারিত ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করছেন।
একেএম হাফিজ আকতার বলেন, এক থেকে পঁচিশ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ সুবিধার কথা বললেও মাত্র তিন হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যায়। অ্যাপস ডাউনলোড করার পরে গ্রাহকের জাতীয় পরিচয়পত্র, ফোন নম্বর, পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের ফোন নম্বর, তাদের ব্যক্তিগত তথ্যসহ অন্যান্য তথ্য দিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলান। পরে চাহিদা অনুযায়ী আবেদনের করলে মাত্রাতিরিক্ত প্রসেসিং ফি নির্ধারণ করে তিন থেকে সাত দিনের জন্য ঋণ প্রদান করা হয়। গ্রাহকের ৩ হাজার টাকার জন্য আবেদন করলে প্রসেসিং ফি বাবদ ৮১০ টাকা কেটে রেখে ২ হাজার ১৯০ টাকা দেওয়া হয়।
এরপর শুরু হয় গ্রাহকের শোষণ। সাত দিনে গ্রাহকের পরিষদ করতে হয় ৩ হাজার ১৮ টাকা। তা ছাড়া নির্দিষ্ট দিনে টাকা দিতে না পারলে প্রতিদিনের জন্য ২০০ টাকা করে দিতে হয়। অনেকেই টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি ও মামলার ভয় দেখানো হয়।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না কী পরিমাণ গ্রাহক এর সঙ্গে জড়িত এবং কত টাকা এখন পর্যন্ত লুট হয়েছে। এ টাকা দেশের বাইরে পাচার হচ্ছে। টাকার লেনদেন হয় বিকাশ এবং নগদের মাধ্যমে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন উপকমিশনার মো. ফারুক হোসেন, গুলশানের ডিসি হারুন অর রশিদ ও অতিরিক্ত উপকমিশনার হাফিজ আল আসাদ।
সাননিউজ/ জেআই