নিজস্ব প্রতিবেদক: রোলকলে একদিন অনুপস্থিত থাকাতে সাড়ে ১১ মাসের হাজিরা বাতিল করা হয়ে। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে শাস্তিমূলক বদলি। এতে সরকারের ১৬ কোটি টাকা গচ্চা গেছে। সম্প্রতি টাঙ্গাইল পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ঘটেছে এমন ঘটনা। প্রশিক্ষণ কোর্স বাতিল হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন পুলিশের ২১২ উপ-পরিদর্শক (এসআই)।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লঘু অপরাধে তাদের গুরুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আহবান তাদের।
একবছর মেয়াদী প্রশিক্ষণ কোর্স শেষ হতে বাকি ছিলো মাত্র ১৫ দিন। কিন্তু ১৪ মে ঈদুল ফিতরের দিন টাঙ্গাইলের পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার থেকে বাইরে যান অনেক প্রশিক্ষণার্থী।
তাদের দাবি, কর্মকর্তাদের মৌখিক অনুমতি নিয়েই তারা বের হন।
রাতে করা হয় রোলকল। এতেই গরহাজির হয়ে যায় ২১২ জন। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে কমিটি গঠন করে পিটিসি। তদন্তে কর্মকর্তাদের গাফিলতি মিলে। আর ২১২ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সদর দপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর-২১২ জনের ডিসি কোর্স বাতিল করেন। শাস্তিমূলক বদলি করা হয় বিভিন্ন জেলায়। গচ্চা যায় সরকারের ১৬ কোটি টাকা।
পুলিশ সদরের এমন সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছেন দু’শতাধিক পুলিশের উপ-পরিদর্শক। যদিও তারা ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য শাস্তি হতেই পারে, তবে এক্ষেত্রে ভিন্ন কিছু হতে পারত।
এ বিষয়ে সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক মোখলেসুর রহমান বলেন, কৈফিয়তটা দিতে হয়। কেন সে গরহাজির হয়েছে, কোথায় সে গিয়েছিল। তার জন্য শাস্তির ব্যবস্থা আছে। তার প্রশিক্ষণের সময় বাড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে। প্রশিক্ষণ কঠিন করে দেওয়া যেতে পারে। এই ব্যবস্থাগুলো তো অভ্যন্তরীণভাবে আছেই।
পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলছেন, ছোট অপরাধে এমন সাজা ঠিক হয়নি। আর পুলিশ সদর দপ্তর বলছে, পুলিশ সেন্টারের রিপোর্টের আলোকেই এই ব্যবস্থা।
মাজহারুল ইসলাম বলেন, এটা উচিত ছিলো যে ছোটখাটো পানিশমেন্ট দিয়ে রিমুভ করা। ছোট ভুল পানিশমেন্ট বেশি হয়ে যাচ্ছে।
ডিপার্টমেন্টাল ক্যাডেট বা ডিসি কোর্স শেষ হলে এসআই হিসাবে তাদের চাকরি স্থায়ী হতো। পাশাপাশি পরিদর্শক হিসাবে পদোন্নতি পরীক্ষা দেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতেন তারা।
একটি ভুলে এমন স্বপ্ন শেষ ১৫ থেকে ২৫ বছর পুলিশে চাকরি করা এসআইদের।
সান নিউজ/এফএআর