নিজস্ব প্রতিবেদক: ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেল জেনেশুনে নেতিবাচক স্ট্র্যাটেজি গ্রহণ করেন। বিভিন্ন লোভনীয় অফারের ফাঁদে ফেলে খুব দ্রুত সাধারণ মানুষকে ইভ্যালির গ্রাহকে পরিণত করেছেন। বর্তমানে তার গ্রাহক সংখ্যা ৪৪ লাখের বেশি। এটি শুরু থেকেই একটি লোকসানি প্রতিষ্ঠান বলে জানিয়েছে র্যাব।
শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ব্রিফিংয়ে র্যাপিড একশন ব্যাটলিয়ান (র্যাব)র লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন ব্রিফিংয়ে এ কথা জানায়।
বিভিন্ন লোভনীয় অফারের মাধ্যমে স্বল্পতম সময়ে এসব গ্রাহক সংগ্রহ করেছেন বলে র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন ইভ্যালির সিইও রাসেল।
খন্দকার আল মঈন বলেন, ইভ্যালি প্রতিষ্ঠালগ্ন হতেই একটি লোকসানি কোম্পানি। কোনো ব্যবসায়িক লাভ এ যাবৎ করতে পারেনি। গ্রাহকদের থেকে পাওয়া অর্থ দিয়েই ইভ্যালি চলত। রাসেল তার কোম্পানির ব্যয়, বেতন, নিজস্ব খরচ নির্বাহ করতেন। ক্রমে ক্রমেই তার দায় বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাসেল জানিয়েছেন, সাভারে তার ব্যক্তিগত কোটি কোটি টাকার সম্পতি রয়েছে। আর ইভ্যালির বর্তমান একাউন্টে ৩০ লাখ টাকা রয়েছে। এছাড়া কয়েকটি গেটওয়েতে ৩০-৩৫ কোটি রয়েছে, এই টাকাগুলো গ্রাহকদের।
গ্রেফতার রাসেল জানান, ২০২১ সাল পর্যন্ত ইভ্যালির দায় ছিলো ৪০৩ কোটি টাকা, এর মধ্যে ইভ্যালির সম্পদ ৬৫ কোটি। এই বিপুল পরিমাণ দায়ের ব্যাপারে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি রাসেল।
র্যাব জানায়, ইভ্যালির দেনা দিন দিন বাড়ছিল। এমন বাস্তবতায় প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল একে দেউলিয়া ঘোষণার পরিকল্পনা করেছিলেন।
জিজ্ঞাসাবাদে এছাড়াও আরো অনেক ঋণ রয়েছে বলে জানান রাসেল। প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার ঋণে ডুবে আছে ইভ্যালি।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ইভ্যালির সিইও মোহাম্মদ রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গুলশান থানায় মামলা হয়। পরে বিকেল সাড়ে ৪টায় মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে তাদের গ্রেফতার করে র্যাব সদরদফতরে নেওয়া হয়। ওই মামলায় রাসেল দম্পতিকে গ্রেফতার দেখায় র্যাব।
আরিফ বাকের নামে ইভ্যালির এক গ্রাহক মামলাটি দায়ের করেন। মামলার নম্বর- ১৯।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আরিফ বাকের গত ২৯ মে ও জুন মাসের বিভিন্ন সময়ে ইভ্যালিতে মোটরসাইকেলসহ বেশ কয়েকটি পণ্য অর্ডার করেন। এগুলো ৭ থেকে ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে দেওয়ার কথা থাকলেও তারা (ইভ্যালি) দেয়নি। ইভ্যালির কাস্টমার কেয়ারে ফোন দিয়ে সমাধান পাওয়া যায়নি। অফিসে গিয়ে তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বললে খারাপ ব্যবহার করেছে। প্রতিষ্ঠানটির সিইও রাসেলের সঙ্গেও দেখা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন বাকের। তার সঙ্গে ইভ্যালি চরম দুর্ব্যবহার করেছে।
সান নিউজ/এফএআর