নিজস্ব প্রতিনিধি প্রতিনিধি কেশবপুর (যশোর): যশোরের কেশবপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের নির্দেশে রড ও হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে ছাত্রলীগের কর্মী শারাফাত হোসেন ওরফে সোহানকে হত্যা করা হয়েছে।
বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) কেশবপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এস এম এবাদত সিদ্দিকীকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র যশোর আদালতে দেয়া হয়েছে। আদালত তা গ্রহণ করে শুনানির দিন ১৮ অক্টোবর ধার্য করেছেন।
আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শারাফাত হোসেন হত্যা মামলায় এবাদত সিদ্দিকীসহ (৪৬) সাতজনকে আসামি করা হয়েছে। অন্য ছয়জন হলেন যশোরের কেশবপুর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মেহেদী হাসান (২৮), সোহেল রানা (৩৩), নাজমুল হাসান ওরফে রাজু (২৪), আবদুর রশিদ (৪৭), রহিম হোসেন (২৩) ও আমীর আলী (৫৪)। পুলিশের তালিকায় এবাদত সিদ্দিকীকে পলাতক দেখানো হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কেশবপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অরূপ কুমার বসু জানান,
ছাত্রলীগ কর্মী হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার বিষয় প্রমাণিত হওয়ায় অভিযোগপত্রে সাতজনকে আসামি করা হয়েছে।
এদিকে, হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে কাউন্সিলর এবাদত সিদ্দিকীকে আসামি করা হলেও তিনি এখনো নিজ পদে বহাল আছেন। তবে স্থানীয় সরকার বিভাগ যশোরের উপপরিচালক হুসাইন শওকত জানান, আইন অনুযায়ী কোনো মামলার অভিযোগপত্রে আসামি হিসেবে কোনো জনপ্রতিনিধির নাম এলে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ওয়ার্ড কাউন্সিল এবাদত সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আদালতে দেয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় ৭ মে কেশবপুর পৌরসভার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের সাইক্লোন শেল্টারকেন্দ্রে স্থানীয় মানুষের মধ্যে টাকা বিতরণ করা হয়। কাউন্সিলর এবাদত সিদ্দিকীসহ তার লোকজন ওই টাকা বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় এবাদতের লোকজনকে মুঠোফোনে ডেকে ডেকে টাকা দেওয়া হয়। তখন লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ভ্যানচালক জসিম প্রতিবাদ করলে কাউন্সিলর এবাদত তাকে চড়-থাপ্পড় মারেন। অন্যরাও তাকে মারপিট করেন। এটা দেখে জসিমের স্ত্রী ফতেমা বেগম এগিয়ে গেলে তার পরনের শাড়ি টেনে ও মারধর করে শ্লীলতাহানি করা হয়।
এ সময় স্থানীয় ছাত্রলীগের কর্মী ও একই গ্রামের শারাফাত হোসেন ও কুদ্দুসকে আসতে দেখে এবাদতের নির্দেশে তাদেরও বেধড়ক পেটানো হয়। এতে অন্তত ২০ জন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় শারাফাতসহ (সোহান) কয়েকজনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ মে শারাফাত মারা যান। পরে শারাফাতের চাচা আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে কেশবপুর থানায় মামলা করেন।
সান নিউজ/এমকেএইচ