নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া যৌনপল্লি থেকে শুক্রবার এক গৃহবধূকে (২৫) উদ্ধার করেছে গোয়ালন্দ ঘাট থানা-পুলিশ। প্রায় দেড় বছর আগে তাঁকে এই যৌনপল্লিতে বিক্রি করা হয়।
এ ঘটনায় শনিবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে থানায় মামলা হয়েছে। ওই গৃহবধূ চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার বাসিন্দা।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ দৌলতদিয়া যৌনপল্লির এক নারী (২৭) ও তাঁর স্বামী কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর এক ব্যক্তিকে (৩০) গ্রেফতার করেছে।
উদ্ধার হওয়া গৃহবধূর মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গৃহবধূর বাবা একজন দরিদ্র ভ্যানচালক। স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় গৃহবধূর মা অন্যত্র বিয়ে বসেন। এ অবস্থায় অতি কষ্টে চলতে থাকে তাঁদের সংসার। প্রায় ৭ বছর আগে সাভারের হেমায়েতপুরে তাঁর বিয়ে হয়। স্বামীর বাড়িতে থাকা অবস্থায় অজ্ঞাত এক যুবকের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। ওই যুবক তাঁকে প্রায় চলচ্চিত্রজগতের নায়িকা বানানোর প্রলোভন দেখাতে থাকেন। অজ্ঞাত যুবকের প্রলোভনে একপর্যায়ে তিনি রাজি হন।
ওই যুবক শুটিংয়ের কথা বলে গত বছর জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে তাঁকে দৌলতদিয়া যৌনপল্লিতে নিয়ে আসেন। সেখানে ওই দম্পতির (গ্রেফতারকৃত ওই নারী ও তাঁর স্বামী) কাছে তাঁকে ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন ওই যুবক। এ সময় ওই দম্পতি তাঁর (গৃহবধূ) কাছে থাকা মোবাইলটি কেড়ে নিয়ে যান। এমনকি তাঁর ঘরে জোর করে তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে একাধিক পুরুষের সঙ্গে টাকার বিনিময়ে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করেন। বাইরে যাতে তিনি পালিয়ে যেতে না পারেন, এ জন্য ঘরের মধ্যে তাঁকে শিকল দিয়ে আটকে রাখা হতো।
গত শুক্রবার ওই গৃহবধূর কাছে একজন খদ্দের আসে। খদ্দের কাছে সে সব ঘটনা খুলে বলে। এ সময় ওই ব্যক্তির সহযোগিতায় তাঁর (ওই ব্যক্তি) মোবাইলটি নিয়ে সরকারের জরুরি হটলাইন নম্বর ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে তাঁকে (গৃহবধূ) উদ্ধারের জন্য সহায়তা চাওয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পরই গোয়ালন্দ ঘাট থানা-পুলিশের একটি দল যৌনপল্লিতে প্রবেশ করে তাঁকে উদ্ধার করে। একই সঙ্গে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই দম্পতিকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর জানান, উদ্ধার হওয়া গৃহবধূ বাদী হয়ে ওই দম্পতি ও অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে শুক্রবার রাতে থানায় মানব পাচার আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে গ্রেফতারকৃতদের আজ শনিবার রাজবাড়ীর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
সান নিউজ/এফএআর