নিজস্ব প্রতিবেদক: এমন দৃশ্য সাধারণত কমই দেখা যায়। বাবা-মেয়েকে স্যালুট দিচ্ছে। তবে কখনো এমন দৃশ্য সামনে চলে আসলে তো ভিন্ন চিত্র দাঁড়ায়। সম্প্রতি রংপুরের গঙ্গাচড়া মডেল থানার এসআই আব্দুস সালাম ও তার মেয়ে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ডা. শাহনাজ পারভীনের এমন একটি দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে সেটি গণমাধ্যমে সংবাদ হয়।
এটি গোচরিভূত হলে সেই বাবা-মেয়েকে সংবর্ধনা দিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশ রংপুর রেঞ্জ এর ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য। বুধবার (১১ আগস্ট) তাঁর নিজ কার্যালয়ে বাবা-মেয়েকে সংবর্ধনা দেন তিনি।
বর্তমানে রংপুরের গঙ্গাচড়া মডেল থানায় কর্মরত সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) আব্দুস সালাম নিজে দেশের কাজে নিয়োজিত থেকে তার মেয়েকেও দেশের কাজে আত্মনিয়োগের জন্য যোগ্য করে গড়ে তুলেছেন। তার মেয়ে ডা. শাহনাজ পারভিন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন। দেশ সেবায় নিয়োজিত গর্বিত বাবা ও মেয়েকে সংবর্ধনাকালে ক্রেস্ট, ফুলেল শুভেচ্ছা ও অন্যান্য উপহারসামগ্রী দেয়া হয়। এ সময় অতিরিক্ত ডিআইজি, এসপিসহ উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এসআই আব্দুস সালামের মেয়ে শাহনাজ পারভিন রংপুর মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন পদে যোগদান করেন। মেয়ের এমন অর্জনে গর্বিত বাবা স্যালুট ঠুকেন তাকে। মেয়েও স্যালুট দেন বাবাকে। বাবা-মেয়ের এই বিরল দৃশ্যটি সম্প্রতি ক্যামেরাবন্দি করে পোস্ট করা হয় রংপুর জেলা পুলিশের রংপুরের ফেসবুক পেইজে। আর সঙ্গে সঙ্গেই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে ভাইরাল হয়ে যায় বাবা-মেয়ের ছবি।
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার চন্দ্রখানা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সালাম পুলিশে যোগদান করেন ১৯৯০ সালে। তার স্ত্রী গৃহিনী মনোয়ারা বেগম। তিন কন্যা সন্তান তাদের। বড় মেয়ে ডা. শাহনাজ পারভীন, দ্বিতীয় মেয়ে উম্মে ছালমা মেডিক্যাল কলেজে তৃতীয় বর্ষে অধ্যায়নরত। তৃতীয় স্মৃতি মনি মীম এসএসসি বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থী।
আব্দুস সালাম বলেন, আমি গর্বিত-আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। চাকরির কণ্যাণে আমাকে ব্যস্ত থাকতে হয়। আমার স্ত্রী মনোয়ারা বেগমই সন্তানদের দেখভাল করেন। আমি তিন মেয়েকেই দেশের কল্যাণে কাজ করার জন্য গড়ে তুলতে চাই।
সংবর্ধনার ব্যাপারে তিনি বলেন, এই সংবর্ধনা শুধুই সংবর্ধনা নয়, আমার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।
রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য বলেন, এ অর্জন শুধু এসআই আব্দুস সালামের নয়, এ গর্ব আমাদের-সমগ্র পুলিশ বাহিনীর। যারা দিন রাত ক্লান্তিহীন, শ্রান্তিহীনভাবে ২৪ ঘণ্টায় ১৮ থেকে ১৯ ঘণ্টায় দেশের মানুষের কল্যাণে দায়িত্ব পালনের পর নিজের পরিবারকে দেওয়ার মত একটু সময় পায় না।
এসআই আব্দুস সালাম পুলিশ বাহিনীতে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। তার মেয়েকেও তিনি দেশের কাজে নিয়োজিত করতে পেরেছেন।
সান নিউজ/এফএআর