নিজস্ব প্রতিবেদক: চিত্রনায়িকা পরীমনির সঙ্গে একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়া পর ডিবির এডিসি পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় গোলাম সাকলায়েন শিথিলকে। এবার আরও একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এতে তাদের অন্তরঙ্গভাবে মিশতে দেখা গেছে। মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) সন্ধ্যার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে।
ধারণা করা হচ্ছে, ভিডিওটি সাকলাইনের জন্মদিনে ধারণ করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, সাকলায়েন-পরীমনি একসঙ্গে কেক কাটছেন। পরীমনি ডিবির সাবেক এডিসি সাকলায়েনের মুখে কেক তুল দিয়েছেন। কেক কাটার পর তার ঠোটে চুম্বনও করেছেন পরীমনি। এছাড়াও আপত্তিকর কিছু দৃশ্য দেখা গেছে।
ভাইরাল ভিডিও ক্যাপশনে বলা হয়, ‘পরীমনি ও পুলিশ কর্মকর্তা সাকলাইনের গোপন ভিডিও! সাকলায়েন পরীমনির সাথে তার অবৈধ সম্পর্কের কথা অস্বীকার করলেও তাদের গোপন একটি ভিডিওটি আমাদের কাছে পাঠান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন পুলিশ কর্মকর্তা৷’
বিভিন্ন গণমাধ্যমের কাছের পরীমণির সঙ্গে নিজের সম্পর্কের কথা বারবার অস্বীকার করা সাকলায়েনের কাছে ভিডিওর বিষয়ে জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার নম্বরটিতে সংযোগ পাওয়া যায়নি।
চিত্রনায়িকা পরীমনির সঙ্গে গোয়েন্দা কর্মকর্তা গোলাম সাকলায়েনের ‘১৮ ঘণ্টা সময় কাটানোর’ ঘটনার তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তর, ডিএমপি এবং সিআইডি এই তিন বিভাগের তিন সদস্যের সমন্বয়ে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) ফারুক হোসেন বলেন, একজন এডিশনাল কমিশনারের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট অফিসিয়ালি একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা তদন্ত করে রিপোর্ট প্রদান করবেন।
বাংলাদেশ পুলিশ সদর দপ্তরের অ্যাডিশনাল ডিআইজি (ডিসিপ্লিন) মো. রেজাউল হক জানান, পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মিয়া মো. মাসুদ করিম, ডিএমপির ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের উপ পুলিশ কমিশনার (ডিসি) ও সিআইডির একজন প্রতিনিধিকে এই কমিটিতে রাখা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
সাকলাইয়েন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) গুলশান বিভাগে এডিসি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত ৪ আগস্ট মাদককাণ্ডে পরীমনি গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার সঙ্গে ওই কর্মকর্তার সম্পর্ক ও এ সংক্রান্ত ভিডিও ফুটেজ গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে তোলপাড় শুরু হয়। এরপরই তাকে ওই পদ থেকে সরিয়ে পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম)-পশ্চিম বিভাগে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, এডিসি গোলাম সাকলায়েনের বিরুদ্ধে যে অভিযোগটি উঠেছে, সেটি নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধ। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ সূত্র জানায়, গত জুনে উত্তরায় বোট ক্লাবে পরীমণির সঙ্গে ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদের ঝামেলার পর ওই ঘটনায় কয়েকটি মামলা হয়। এরপর অভিযান চালিয়ে ওই ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর একটি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন এডিসি গোলাম সাকলায়েন। মামলা তদন্তের কারণেই পরীমনির কাছাকাছি আসেন পুলিশের এ কর্মকর্তা।
ঢাকা মহানগর পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, সাকলায়েনের সঙ্গে পরীমনির কত দিনের সম্পর্ক, কীভাবে তিনি সম্পর্কে জড়ালেন, মামলার তদন্তে এ সম্পর্কের কোন প্রভাব পড়েছে কিনা, এসব বিষয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্ত করা হবে।
পাশাপাশি ডিবিতে দীর্ঘ সময় ধরে দায়িত্ব পালনকালে তিনি অনৈতিক কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছিলেন কিনা, সে বিষয়ে যাচাই করা হবে।
সান নিউজ/এফএআর/এমআর