নিজস্ব প্রতিনিধি, বরিশাল: বরিশাল জেলা ডিবির ওসি মিজানুর রহমানের স্ত্রীর নির্যাতন সই না পেরে বাড়ি থেকে পালিয়েছে মনি নামের ছোট্ট একটি কাজের মেয়ে। পরে তাকে উদ্ধার করে কোতোয়ালি মডেল থানার ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বেলা ১১টায় ঘটনাটি ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম। তিনি জানান, শিশুটির পরিবারের কোনো অভিযোগ থাকলে তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রত্যক্ষদর্শী রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, বেলা ১১টার দিকে চৌমাথা বাজারের সামনের রাস্তা পার হচ্ছিল ওই শিশুটি। তার হাতে একটি শপিং ব্যাগ ছিল। এ সময়ে এক নারী ও একজন ছেলে এসে শিশুটিকে ধরে চড়-থাপ্পড় দেয়।
এ সময় শিশুটি কান্না করে বলছিল, ‘আমি আমনেগো লগে যামু না।’ ঘটনা দেখে চারপাশের লোক জড়ো হলে ওই নারী অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। প্রত্যক্ষদর্শী মমতাজ বলেন, মানুষ মানুষকে এভাবে মারতে পারে না। গরিব মারলে তো আর বিচার হয় না।
প্রত্যক্ষদর্শী আবুল কালাম বলেন, মানুষের ভিড় বাড়লে নিকটস্থ পুলিশ বক্সের দায়িত্বরত সদস্যরা শিশুটিকে তাদের হেফাজতে নেন এবং মারধরকারীদের বাসায় চলে যেতে বলেন।
জানা গেছে, নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মী মনির বয়স ১১ বছর। সে বাবুগঞ্জ উপজেলার পিতা মন্টু হাওলাদারের মেয়ে। রুপাতলী এলাকায় ডিবি ওসির মিজানুর রহমানের বাসায় কাজ করতেন। এ সময় তাকে অনেকবারই নির্যাতন করা হয়। এ কারণে আজ সে বাসা থেকে পালিয়ে যায়। এরপর তাকে নগরীর চৌমাথা এলাকায় মিজানুর রহমানের স্ত্রী রাস্তায় মারধর করে।
অভিযুক্ত নারীর স্বামী জেলা ডিবির ওসি মিজানুর রহমান দাবি করেন, ৩ দিন আগে শিশুটির মা আমার বাসায় রেখে যান। আমার স্ত্রী অসুস্থ। আজ সকালে সে রিপোর্ট দেখানোর জন্য বাইরে বের হয়েছে। আমি বাসায় একটু ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। এই সুযোগে শিশুটি ঘরের বাইরে বের হয়ে যায়। ১২ বছরের শিশু আপনার বাসায় কী কারণে রেখেছেন? প্রশ্নের জবাবে কিছুই বলতে পারেননি তিনি।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি নুরুল ইসলাম বলেন, শিশুটির সঙ্গে কথা বলেছি। ৬ দিন আগে সে ওই বাসায় কাজ শুরু করেছে। সেখানে বকাঝকা করায় মেয়েটি আজ সকালে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। পরিবারের লোকজন খুঁজতে বের হয়, ঘটনাস্থলে এসে শিশুটিকে পেলে তারা বাসায় নিয়ে যেতে চান। কিন্তু মেয়েটি না যেতে চাইলে তারা টানাহেঁচড়া করেন।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান বলেন, শিশুটি উদ্ধার করে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে। ভিকটিমের জবানবন্দি ও বাবা-মায়ের অভিযোগ শুনেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সান নিউজ/এফএআর