নিজস্ব প্রতিনিধি : রাজধানীর তোপখানা রোডের একটি বাসা থেকে সুইটি নামে ১২ বছর বয়সী এক শিশু গৃহকর্মীকে নির্মম নির্যাতনের অভিযোগে স্বামী মো. তানভির আহসান এবং স্ত্রী অ্যাডভোকেট নাহিদকে গ্রেফতার করেছে শাহবাগ থানা পুলিশ।
শনিবার (৩ জুলাই) রাতে পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি মিডিয়া) মো. সোহেল রানা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, নির্যাতিতা সুইটির বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন থানার নবাবপুর গ্রামে। অভাবের তাড়নায় দরিদ্র বাবা-মা তাকে রাজধানীর তোপখানা রোডে একটি বাসায় গৃহকর্মীর কাজে দিতে বাধ্য হয়েছে। এখানে সে ৯ মাস ধরে কাজ করছে। প্রায় প্রতিদিনই তাকে নানা অজুহাতে গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রী স্বামী-স্ত্রী দুজন মিলে মারধর করে। এক পর্যায়ে মেয়েটির শরীরে নির্যাতনের আঘাতের চিহ্নসহ কিছু ছবি শনিবার (৩ জুলাই) রাতে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে দ্রুত সহযোগিতা ও আইনি ব্যবস্থার আকুতি জানান এক প্রতিবেশী।
সোহেল রানা বলেন, ছবিতে দেখা যায় মেয়েটির চোখের নীচে আঘাতের চিহ্ন, হাতে গুরুতর জখম। অপর একটি ছবিতে মেয়েটির পশ্চাৎদেশে উভয়পাশে আগুনে পোড়া ঘা চোখে পড়ে। এই দৃশ্য যে কারো বিবেককে নাড়া দিতে বাধ্য। এই পোস্টটি একুশে টিভির এক সংবাদকর্মীর চোখে পড়লে তিনি তা বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস উইংকে পাঠিয়ে দ্রুত সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। ঘটনাস্থল কোন থানার অধীনে তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত না হওয়ায় মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস উইং বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গেই রমনা থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম এবং শাহবাগ থানার ওসি মওদুত হাওলাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেয়।
তিনি বলেন, উভয় থানা থেকেই দ্রুতগতিতে ঘটনাস্থলের দিকে একটি করে টিম ছুটে যায়। পরবর্তীতে জানা যায় ঘটনাস্থলটি শাহবাগ থানার অধীনে। এরপর শাহবাগ থানার ওসি মওদুত হাওলাদারের তাৎক্ষণিক তৎপরতায় শাহবাগ থানার ইন্সপেক্টর অপারেশন্স মো. কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে এসআই মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ পুলিশের একটি টিম মেয়েটিকে উদ্ধার করে এবং নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত স্বামী মো. তানভির আহসান এবং স্ত্রী অ্যাডভোকেট নাহিদকে গ্রেফতার করে।
তিনি আরও বলেন, ফেসবুকে দেওয়া পোস্টের মাত্র দেড় ঘণ্টার মধ্যে এবং বিষয়টি পুলিশের নজরে আসার মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে ভিকটিমকে উদ্ধার ও অভিযুক্তদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এই বিষয়টি কোনো এক সচেতন নাগরিক ৯৯৯ কেও ফোন করে জানায়। পরবর্তীতে ৯৯৯ থেকেও থানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
সান নিউজ/এসএম