চট্টগ্রাম ব্যূরো : বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) বেলা ১১ টায় চট্টগ্রাম মহানগরীর নিউমার্কেট থেকে কাজীর দেউড়ি মোড়ে আসা একটি প্রাইভেট কার থামাতে সংকেত দেয় পুলিশ। গাড়িতে ছিলেন বন্দর কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া নাসির উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি।
তিনি পুলিশকে জানান, বন্দরে যাচ্ছেন। পুলিশ বললেন, বন্দর তো এদিকে না। তার ওপর গাড়ির কাগজপত্রও পাননি পুলিশ। আর এ নিয়ে ১৫ মিনিটের মতো পুলিশের সঙ্গে বন্দর কর্মকর্তার যে কথাবার্তা, তা দেখতে জড়ো হন ৩০-৩৫ জন উৎসুক জনতা।
যাদের মধ্যে ছিল না কোন সামাজিক দুরত্ব বজায়। ছিল না অনেকের মুখে মাস্কও। এমন অবস্থায় কাগজপত্র না থাকায় বন্দর কর্মকর্তার ওই গাড়িকে জরিমানা করতেও দেখা যায়। এই অভিযানে ছিলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (ট্রাফিক দক্ষিণ) মো. কামরুল ইসলাম, সার্জেন্ট সঞ্জয় ও আরাফাত।
ঠিক ১০ গজ দূরেই চেক পোস্টে দায়িত্ব পালন করছিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট ওমর ফারুকের নেতৃত্বে একটি ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই সময়ে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে ব্রিফ করছিলেন জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমানও। তিনি লকডাউন বাস্তবায়নে কঠোর আইন প্রয়োগসহ নানা কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন।
পুলিশের এমন নানা দৃশ্য দেখতে ভিড় জমান উৎসুক জনতা। যাকে লকডাউন ভেঙে লুকডাউন বলে মন্তব্য করছেন নগরবাসীর অনেকে।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বিও এ প্রসঙ্গে বিরুপ মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, সরকরি ঘোষণা অনুযায়ী, যেখানে বিনা প্রয়োজনে বা জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ রাস্তায় বের হলেই আটক বা মামলা দেওয়া হবে ঘোষণা রয়েছে। সেখানে এভাবে জড়ো হয়ে পুলিশে কার্যক্রম দেখা মোটেই কাম্য নয়। লকডাউনে এসব দৃশ্য বিস্ময়কর।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিএমপির ট্রাফিকের (দক্ষিণ) পরিদর্শক (এডমিন) মো. মহিউদ্দিন বলেন, সার্জেন্ট গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। এখন উৎসুক জনতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হলে মোবাইল কোর্ট ও থানা পুলিশের দরকার। এ বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট ওমর ফারুকের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
তবে নগরীর ডবলমুরিং থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন এ বিষয়ে বলেন, সকাল থেকেই একটি চেকপোস্ট ও পাঁচটি টহল টিমের মাধ্যমে অভিযান চালানো হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া লোকদের গন্তব্যে পৌঁছাতে সহযোগিতা করছি। পাশাপাশি অকারণে যাঁরা বের হয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। লকডাউন কেমন চলছে দেখতে বের হওয়া এমন ২১ জনকে আটক করা হয়েছে।
লকডাউন সম্পর্কে জানতে চাইলে সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) শ্যামল কুমার নাথ বলেন, চট্টগ্রামে মানুষ সফলভাবে লকডাউন পালন করছে। কিছু রিকশাচালক মাস্ক পরেনি, তাদের আমরা বিভিন্ন জায়গায় মাস্ক দিয়েছি। কিছু মানুষও বিভিন্ন অজুহাতে মাস্ক পরছে না। তাদের জরিমানা করেছি।
সান নিউজ/ আইকে