নিজস্ব প্রতিবেদক:
নভেল করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে সরকারের ‘সমন্বিত উদ্যোগের’ মাঝেই ফেসবুকে এনিয়ে ‘উস্কানিমূলক’ বক্তব্য ও ছবি পোস্ট করায় সরকারি কলেজের দুই শিক্ষক বরখাস্ত হয়েছেন।
তারা হলেন, ময়মনসিংহের গফরগাঁও সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী জাকিয়া ফেরদৌসী এবং বরিশাল সরকারি মহিলা কলেজের দর্শন বিভাগের প্রভাষক সাহাদাত উল্লাহ কায়সার। তাদেরকে সাময়িক বরখাস্ত করে বুধবার (২৫ মার্চ) আদেশ জারি করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করে শোকজ করা হয়। পাশাপাশি সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী কেন তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে জানাতে তাদের নোটিসও পাঠানো হয়েছে।
কাজী জাকিয়া ফেইসবুকে লিখেছিলেন, “খা সব খেয়ে ফল (ফেল)। শিক্ষা খেয়েছিস, ছাব্বিশটা ক্যাডার খেয়েছিস, সরকারকে খেয়েছিস, সরকারের সুনাম, অর্জন, স্বপ্ন সব খেয়েছিস। এবার পিপিই খা। সব তোরাই খা। আমাদের লাগবে না। মুখে মাস্ক দিয়ে বসে থাক সব নির্লজ্জ, রাক্ষসের দল। বিপদে পড়লে কোন অরক্ষিত ডাক্তারের কাছে যাবি না, যদি সামান্য লজ্জা থাকে। আর দেশের সবাই মরে গেলে নিজেরা ঝাড়ুদার ক্যাডারে এবজর্বড হয়ে যাস, আর সেল্ফি দিস।”
সাহাদাত উল্লাহ লিখেছিলেন, “করোনার ভয়ে চাকুরি ছাড়ার সংবাদটা বুলগেরিয়ার। বাংলাদেশের ডাক্তার ভাইয়েরা আপনার নিজের জীবন আগে, তারপর আপনার পরিবার, ছেলে মেয়ে, স্ত্রী তারপর অন্যসব। যে দেশ আপনার পেশার মূল্যায়ন করে না সে দেশের জন্য কাজ করে কী হবে। সেখানে তিন দিনের ইউএনও ৫৫ বছরের একজন প্রফেসর ডাক্তারের নিয়ন্ত্রক থাকে, যে কিনা ডাক্তারির ‘ড’ ও জানে না।”
এই শিক্ষকদের বরখাস্তের আদেশে বলা হয়েছে, “দেশব্যাপী করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়, দপ্তর, সংস্থা বর্তমানে বিভিন্ন পর্যায়ে সমন্বিতভাবে কার্যক্রম পরচালনা করছে। সে অবস্থায় আপনি আপনার ফেসবুক আইডি থেকে নিজ নামে অনভিপ্রেত ও উস্কানিমূলক বক্তব্য ও ছবি পোস্ট করেছেন, যা সরকারের চলমান সমন্বিত কার্যক্রমের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।”
শিক্ষা ক্যাডারের এসব কর্মকর্তাদের আচরণকে ‘সরকারি ব্যবস্থাপনা ও জনস্বার্থবিরোধী এবং শৃঙ্খলা পরিপন্থি’ আচরণ উল্লেখ করে একে অসদাচরণ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
২৫ মার্চ থেকে এদের সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে সরকার বলছে, বরখাস্তকালীন তারা বিধান মোতাবেক খোরপোষ ভাতা পাবেন এবং এসময়ে তাদের নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের ‘গোচরে’ অবস্থান করতে হবে।