বরগুনা প্রতিনিধি: নবম শ্রেণি পড়ুয়া ১৪ বছরের কিশোরীকে অপহরণের মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া সময় টিভির বরগুনার নিজস্ব প্রতিবেদক এম এ আবদুল আজিমের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। একইসঙ্গে পুলিশের আবেদনে অপহৃত স্কুলছাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন। অপহরণে ব্যবহৃত গাড়িটি শহরের বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কমপ্লেক্স এলাকা থেকে জব্দ করেছে পুলিশ।
কারাগারে থাকা আজিমের পক্ষে রোববার (০৪ অক্টোবর) সকালে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিনের আবেদন জানান তার আইনজীবী অ্যাড. সাইফুল ইসলাম সোহাগ মোল্লা। শুনানি শেষে তা নামঞ্জুর করেন সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালত।
বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম তারিকুল ইসলাম জানান, অপহৃত কিশোরীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার আবেদন জানানো হলে আদালত তা মঞ্জুর করেন। আদালতের নির্দেশে রোববার দুপুরে ভিকটিমকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মামলার অন্য দুইজন আসামি আজিমের ঘনিষ্ঠ বন্ধু গ্রাফিক্স ডিজাইনার শুভ সেন (২৬) ও একাত্তর টেলিভিশনের বরগুনা প্রতিনিধি ইমরান হোসেন টিটুকে (২৭) গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জানিয়েছেন, রোববার সন্ধ্যায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কমপ্লেক্স এলাকা থেকে অপহরণে ব্যবহৃত সাদা প্রাইভেটকারটি (নং-ঢাকা মেট্রো-গ ১৭-৮২৩৪) জব্দ করেছে সদর থানা পুলিশ।
শহরের এক বস্ত্র ব্যবসায়ীর নবম শ্রেণিতে পড়ুুয়া মেয়েটিকে অপহরণের অভিযোগে তার কাকা শুক্রবার (০২ অক্টোবর) রাতে সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০৩ (সংশোধিত) এর ৭/৩০ ধারায় আজিম, শুভ ও টিটুর নাম উল্লেখ ও ২/৩ জন অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।
সদর থানা পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে মেয়েটিকে জোরপূর্বক ওই সাদা প্রাইভেটকারে করে নিয়ে যান সাংবাদিক আজিমসহ দুর্বৃত্তরা। এ সময় ২নং সাক্ষী চিৎকার দিলে প্রাইভেটকারটি দ্রুতগতিতে বরগুনা টাউন হলের দিকে চলে যায়।
শনিবার (০৩ অক্টোবর) ভোররাতে বরগুনা সদর থানা পুলিশ ও পটুয়াখালীর মহিপুর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে পটুয়াখালীর কুয়াকাটার গোল্ডেন ইন আবাসিক হোটেল থেকে সাংবাদিক আজিমকে গ্রেপ্তার ও অপহৃত ছাত্রীকে উদ্ধার করে। পরে বরগুনায় এনে শনিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে আজিমকে কারাগারে পাঠানো ও ভিকটিমকে পরিবারের কাছে দেওয়া হয়। মামলার ২ নম্বর আসামি শুভ ও ৩ নম্বর আসামি টিটু এখনও পলাতক।
এদিকে সাংবাদিক আজিম গ্রেপ্তারের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে তার বিরুদ্ধে ওঠা অপরাধ ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের নানা ফিরিস্তি। অভিযোগ উঠেছে, কয়েকজন মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে তাদেরকে অনৈতিক কাজে বাধ্য করতেন আজিম ও তার সহযোগীরা। বৈধ উৎস ছাড়াই প্রচুর অর্থ উপার্জন, নারীদের দিয়ে বিভিন্ন মানুষকে ব্ল্যাকমেইল, সাংবাদিকতার প্রভাব বিস্তার করে নামে-বেনামে বিভিন্ন জায়গায় অবৈধ দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসতঘর নির্মাণেরও অভিযোগ তোলা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে।