কামরুজ্জামান স্বাধীন, উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের উলিপুরে দীর্ঘ ৪০ বছর পর সীমাহীন দুর্ভোগের অবসান ঘটল দুই গ্রামের প্রায় তিন সহস্রাধিক মানুষের। যোগাযোগ ব্যবস্থা ও মানুষের মধ্যে সম্পর্ক গাঢ় হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
আরও পড়ুন : চট্টগ্রামে গ্যাস বন্ধ
বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে রাস্তাটি উদ্বোধন করেন পৌর মেয়র আলহাজ্ব মামুন সরকার মিঠু।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবু সাঈদ সরকার, পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান রাজু, নারিকেল বাড়ী পন্ডিত মহির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস ছাত্তারসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
আরও পড়ুন : বিল থেকে মরদেহ উদ্ধার
জানা যায়, পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডটি ১১টি পাড়া নিয়ে গঠিত। এই ওয়ার্ডটির পশ্চিমে সীমান্তঘেঁষা থেতরাই ইউনিয়ন। নারিকেল বাড়ী গ্রামের আংশিক ও থেতরাই ইউনিয়নের হারুনেফড়া গ্রামের প্রায় ৭০০ পরিবারের প্রায় তিন হাজার মানুষের বসবাস। নারিকেল বাড়ির পূর্ব ছড়ার পাড় থেকে থেতরাই ইউনিয়নের গোপালের ছড়া পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার একটি রাস্তা দীর্ঘ সময় থেকে মানুষের চোখে পড়লেও যা প্রায় ৪০ বছর ধরে অবহেলিত। একাধিকবার জনপ্রতিনিধি পরিবর্তন হলেও এলাকাবাসীর ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। অবশেষে ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান রাজুর উদ্যোগে পৌর মেয়রের সহায়তায় রাস্তাটির ভরাট কাজ শুরু হয়। প্রায় এক মাস পর ১৪ ফুট প্রশস্ত এক কিলোমিটার রাস্তাটির সংস্কার কাজ করা হয়।
ওই রাস্তা সংলগ্ন স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রশিদ, হাফেজ উদ্দিন, আয়নাল হক, আব্দুল কুদ্দুস, কাশেম আলীসহ অনেকেই জানান, রাস্তাটি না থাকায় গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে পারতাম না, নানা সমস্যায় পড়তে হতো। এমনকি কেউ মারা গেলে লাশ নিয়ে বের হওয়ার উপায়ও ছিল না। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে শিক্ষার্থী ও পথচারীদের দুর্ভোগের সীমা ছিল না। তারা আরো জানান, অনেকদিন পর রাস্তাটি সংস্কার হওয়ায় দীর্ঘ দিনের ভোগান্তির লাঘব হলো।
আরও পড়ুন : বাস-সিএনজি সংঘর্ষ, নিহত ২
স্কুল শিক্ষার্থী মণি ও মিজবাহউল ইসলাম জানান, আগে আমরা অন্যের বাড়ির ভেতর দিয়ে স্কুলে যাইতাম। অনেক সময় কটু কথা শুনতে হতো এখন রাস্তা নির্মাণ হয়েছে সহজে স্কুলে যেতে পারবো আর কটু কথা শুনতে হবে না।
নারিকেল বাড়ী পন্ডিত মহির উদ্দিনর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস ছাত্তার বলেন, প্রায় ৪০ বছর পর নতুন রাস্তা পেলাম। এজন্য পৌর কাউন্সিলর, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও মেয়রের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন : ৩৬ ঘণ্টা পরও নিখোঁজ ইঞ্জিন মাস্টার
৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান রাজু বলেন, আমার বয়সে দেখি নাই এই রাস্তায় দিয়ে কোনো যানবাহন চলেছে। বিগত সময়ে কোনো
জনপ্রতিনিধিরাও রাস্তাটি করার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেননি। আমি কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর আপাতত মাটি ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ করে জনসাধারণের চলাচলের দুর্ভোগ দূর করার চেষ্টা করেছি মাত্র।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবু সাঈদ সরকার বলেন, এলাকাবাসীর চলাচলের স্বার্থে এই রাস্তাটি মেয়র ও কাউন্সিলর মহোদয় করে দিলেন। তাদের পৌর পরিষদের মেয়াদেই রাস্তাটি পাঁকাকরণ করে দিবেন বলে আশা ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন : রাতে ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ
উলিপুর পৌর মেয়র আলহাজ্ব মামুন সরকার মিঠু বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে সরকারের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে জনসাধারণের চলাচলের জন্য এই রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে রাস্তাটি পাঁকা করণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সান নিউজ/এমআর