ঝালকাঠি প্রতিনিধি: ঝালকাঠিতে পুলিশের রাইফেল থেকে বের হওয়া গুলিতে আহত চা দোকানী মনির মাহমুদ বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে আর্থিক সংকটে রয়েছে। রাজাপুর থানার তারাবুনিয়া বাজার এলাকায় গত ২৪ ডিসেম্বর শনিবার দিবাগত রাত পৌনে ১টায় ঘটনাটি ঘটে।
আরও পড়ুন: আগুনে পুড়ল দুই দোকান
বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে তা জানাজানি হয়। উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন চা-পানের দোকানটি বন্ধ থাকায় মনিরের চিকিৎসা ব্যয় সংকুলান করতে পারছেনা তার পরিবার। এতে ঐ পরিবারটি মানবেতর জীবন যাপন করছে। এ ঘটনায় কনষ্টেবল নুরুল ইসলামকে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে বরখাস্ত করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। ঘটনার কারন অনুসন্ধানে ঝালকাঠি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আহত মনির মাহমুদ রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া ইউনিয়নের উত্তর তারাবুনিয়া গ্রামের রোলা এলাকার মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে। সে একই ইউনিয়নের লেবুবুনিয়া বাজারে ছোট্ট একটি দোকানে চা পান বিক্রি করে রোজগার করেন।
আরও পড়ুন: স্ত্রী হত্যায় স্বামী আটক
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আহত মনির বলেন, 'লেবুবুনিয়া বাজারে ২৪ ডিসেম্বর শনিবার দিবাগত রাত সারে ১২ টায় টহলে আসেন থানা পুলিশ। তখন আমি দোকানে চা বানাচ্ছিলাম। হটাৎ কনস্টেবল নূরুল ইসলাম এর হাতে থাকা বন্দুক থেকে গুলি বের হয়ে আমার পায়ে লাগে। এতে পায়ের পাতা ঝাঝরা হয়ে যায়। আহত অবস্থায় পুলিশের লোকেরাই আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
গুলিবিদ্ধ মনির বর্তমানে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৪র্থ তলায় সার্জারী বিভাগের ২নং ওয়ার্ডের ১০ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তবে তার দোকান বন্ধ থাকায় অর্থ সংকটের কারনে চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে বেগ পেতে হচ্ছে। মনিরের পরিবার অর্থাকষ্টে ভুগছে। তার পরিবারে 'ঘরে এক দিনের (চাল/ডাল) খাবারও নেই।' বুধবার পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ থেকে মনিরকে ৩ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। যা প্রথম দিনেই শেষ হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: বাসচাপায় বাবা-ছেলে নিহত
ঘটনার সময় সেখানে দায়িত্বরত রাজাপুর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এস.আই) আজাদ জানান, 'আমরা টহল দিতে লেবুবুনিয়া বাজারে যাই। সেখান থেকে অন্যত্র যাওয়ার উদ্দেশ্যে অটোতে উঠতেছিলাম তখন হটাৎ করে কনস্টেবল নুরুল ইসলামের আগ্নেআস্ত্র থেকে একটি মিস ফায়ার হয়। এতেই মনির আহত হয়।
রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, 'হাটার সময় মিস ফায়ার হয়ে কনস্টেবলের হাতিয়ার থেকে গুলি বের হয়েছে। তবে আহত ব্যক্তি মুমুর্ষ অবস্থায় নেই। তার চিকিৎসার খোজ খবর আমরা (পুলিশ) নিচ্ছি। আর্থিক বিষয়টিও দেখছি।
আরও পড়ুন: হাজতে ঝুলছিল আসামির মরদেহ
ঝালকাঠির পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল জানান, ডিউটির সময় কনষ্টেবলের শর্টগান থেকে অসাবধানতাবশত গুলিটি বের হয়েছে। আহত মনির মাহমুদের চিকিৎসার সার্বিক খোঁজ রাখা হচ্ছে। বর্তমানে তিনি সুস্থ আছেন। এ ঘটনায় কনষ্টেবল নুরুল ইসলামকে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে রাজপুর থানার ওসির শুপারিশে বরখাস্ত করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। ঝালকাঠি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সান নিউজ/এএ