নিজস্ব প্রতিবেদক: ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ উপকূল অতিক্রমকালে কক্সবাজারে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ সময় জেলার পৃথক স্থানে ৩ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: বেনাপোলে আমদানি-রফতানি শুরু
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) রাতে কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানে হামুন। ঘূর্ণিঝড়টি সন্ধ্যার পর মহেশখালী-কুতুবদিয়া উপকূলের স্থলভাগে উঠে আসতে শুরু করে।
এ সময় সেখানে প্রবল ঝাড়ো হাওয়াসহ ভারি বৃষ্টি শুরু হয়, যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে থাকে। টানা ২ ঘণ্টা পর দুর্বল হয় হামুন। পরে রাত সাড়ে ১২ টায় কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করে নিম্নচাপে পরিণত হয় ঘূর্ণিঝড়টি।
এরপর মাঝরাতেও থেমে থেমে বৃষ্টি হয়। এ ঝড়ে উড়ে গেছে অনেক গাছপালা, বিধ্বস্ত হয়েছে কাঁচা ও আধা কাঁচা ঘরবাড়ি।
আরও পড়ুন: ৩ বিভাগে ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা
কক্সবাজারে ৩ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে স্থানীয় কাউন্সিলর ওসমান সরওয়ার টিপু জানান, কক্সবাজার শহরে দেয়াল ধসে একজন ও মহেশখালী এবং চকরিয়ায় গাছ চাপা পড়ে ২ জন নিহত হয়েছেন।
কক্সবাজার পৌরসভা ৭ নং ওয়ার্ডে দেয়াল ধসে নিহত হন আবদুল খালেক (৩৮)। মহেশখালী উপজেলার বড় মহেশখালী ইউনিয়নের মুন্সির ডেইল গ্রামে গাছ চাপা পড়ে হারাধন নামের ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া চকরিয়া উপজেলার বদরখালীতে আসকর আলী নামের আরও ১ জন মারা গেছেন।
আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টির ১২০ কিলোমিটার গতি নিয়ে অগ্রভাগ স্থলভাগ স্পর্শ করলেও দ্রুত এর গতি কমে আসে।
আরও পড়ুন: বায়ুদূষণে ঢাকা ১৩তম
মঙ্গলবার রাত ১০ টায় আবহাওয়া দফতরের পরিচালক আজিজুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা ঝড়ো হাওয়া আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।
এ সময় স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে উপকূলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। এ দিন সন্ধ্যা সোয়া ৭ টা থেকে একটানা রাত সাড়ে ৯ টা পর্যন্ত কক্সবাজার উপকূল ও এর আশেপাশের অঞ্চলের ওপর দিয়ে ব্যাপক ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায়। সেই সাথে চলে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত।
ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’-এর তাণ্ডবে কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়ক জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরসহ অনেক এলাকায় গাছ উপড়ে পড়ে। এতে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: সারা দেশে নৌযান চলাচল স্বাভাবিক
এছাড়া এ দিন সন্ধ্যার পর থেকে কক্সবাজার শহরসহ আশেপাশের এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। ‘হামুনে’ সৃষ্ট ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিতে জেলার কাঁচা ঘরবাড়ি ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি ও এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিন্মাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৫ ফুটের বেশি উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছাসে প্লাবিত হয়। ফলে সারা দেশে নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
সান নিউজ/এনজে